ঢাকা, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২

মালয়েশিয়ার ১০ শর্ত শিথিলের অনুরোধ বাংলাদেশের

২০২৫ নভেম্বর ০৭ ১২:২৩:৩৫

মালয়েশিয়ার ১০ শর্ত শিথিলের অনুরোধ বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক :মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠাতে আগ্রহী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য দেশটি যে ১০টি শর্ত দিয়েছে, তার মধ্যে তিনটি শর্ত শিথিলের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকারকে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ ১৪ নভেম্বরের মধ্যে রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পাঠাতে বলেছে, তবে বাংলাদেশ সরকার সময়সীমা বাড়ানোর আবেদনও করেছে।

মালয়েশিয়া সরকারের শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল—রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসের আয়তন কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুট হতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের বেশির ভাগ এজেন্সির এত বড় অফিস নেই। তাই এই শর্তটি শিথিল করতে বলা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, শর্তে উল্লেখ ছিল যে, কর্মী পাঠানো এজেন্সির নিজস্ব প্রশিক্ষণকেন্দ্র থাকতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ এজেন্সি প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) ব্যবহার করে থাকে। ফলে এই শর্তটিও বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করছে বাংলাদেশ সরকার।

তৃতীয় শর্ত অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট এজেন্সির গত পাঁচ বছরে কমপক্ষে তিন হাজার কর্মী বিদেশে পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এই শর্ত ছোট ও নতুন এজেন্সিগুলোর জন্য বৈষম্যমূলক। তাই এটিও শিথিল করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মালয়েশিয়া সরকারের এই ১০ শর্ত কেবল বাংলাদেশ নয়, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও মিয়ানমারকেও দেওয়া হয়েছে। ওই দেশগুলোও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে আঞ্চলিক পর্যায়ে আলোচনার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে, গত বছরের ৩১ মে মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা ১৭ হাজার কর্মীর মধ্যে প্রথম ধাপে সাত হাজার কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল মালয়েশিয়া সরকার। নির্মাণ ও পর্যটন খাতে এসব কর্মী নেওয়ার কথা ছিল।

তবে এখন পর্যন্ত পর্যটন খাতের কোনো চাহিদা বাংলাদেশ পায়নি বলে জানিয়েছেন ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা বিজ্ঞাপন ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের জানিয়ে আবেদন গ্রহণ করেছি।

কিন্তু মাত্র তিন হাজার কর্মী আবেদন করেছেন। মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলো এখন তাদের যোগ্যতা যাচাই করছে এবং আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।”

তিনি আরও জানান, সরকার ঘোষিত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষ করে কর্মীদের পাঠানোর চেষ্টা করা হবে। এরপর বাকিদের জন্য সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হবে।

মন্ত্রণালয় আশা করছে, শর্তগুলো কিছুটা শিথিল হলে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো সহজ হবে এবং আটকে থাকা শ্রমবাজার পুনরায় সচল হবে।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত