ঢাকা, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে আমানত নিরাপদ, মিলবে ধাপে ধাপে

২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৭:০৫:২৩

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে আমানত নিরাপদ, মিলবে ধাপে ধাপে

নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুনভাবে গঠিত সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, ব্যাংকটি সদ্য কার্যক্রম শুরু করায় প্রাথমিক পর্যায়ে সীমিত পরিসরে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে কোনো আমানতকারীর টাকা হারিয়ে যাবে না—এই নিশ্চয়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিটি আমানতকারী সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত উত্তোলন করতে পারবেন। এই সীমার বাইরে থাকা অর্থ সংশ্লিষ্ট হিসাবেই নিরাপদ থাকবে এবং প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী তাতে মুনাফাও যোগ হতে থাকবে। ব্যাংক আর্থিকভাবে আরও শক্ত অবস্থানে পৌঁছালে পর্যায়ক্রমে উত্তোলনের সীমা বাড়ানো হবে।

আরিফ হোসেন খান ব্যাখ্যা করে বলেন, বিশ্বের কোনো ব্যাংকের পক্ষেই একসঙ্গে সব আমানতকারীর সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করা সম্ভব নয়। আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া একটি স্বাভাবিক ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি, যা ডিপোজিট প্রোটেকশন আইনের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তিনি আরও জানান, সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক নিয়মিত ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করবে, খেলাপি ঋণ আদায় করবে এবং নতুন আমানত সংগ্রহে সক্ষম হবে। এসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ব্যাংক ধীরে ধীরে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল হয়ে উঠবে। ব্যাংক যত দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে, আমানতকারীরাও তত দ্রুত বাকি অর্থ উত্তোলনের সুযোগ পাবেন।

পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত হয়ে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকে রূপ নেওয়ার আইনি ভিত্তি নিয়েও কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এই মুখপাত্র। তিনি জানান, অধিগ্রহণ এবং সম্পদ ও দায় (অ্যাসেট ও লাইয়াবিলিটি) হস্তান্তরের মাধ্যমে পুরোনো ব্যাংকগুলো নতুন ব্যাংকে বিলীন হয়েছে। এ প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ আইনসম্মত এবং বিদ্যমান ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী সম্পন্ন হয়েছে।

এ কারণে গ্রাহকদের নতুন করে কোনো হিসাব খোলার প্রয়োজন নেই। পূর্ববর্তী ব্যাংকের হিসাব, আমানত ও ঋণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের অধীনে চলে গেছে। অতীতেও বাংলাদেশে ব্যাংক মার্জারের ক্ষেত্রে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দুই লাখ টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে গ্রাহকরা নিজ নিজ পুরোনো শাখায় গিয়ে বিদ্যমান চেক বই ব্যবহার করেই অর্থ তুলতে পারবেন। নতুন চেক বই ইস্যু করতে কিছুটা সময় লাগলেও এতে গ্রাহকদের অধিকার বা আমানত উত্তোলনে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি হবে না বলে স্পষ্ট করেন তিনি।

বড় অঙ্কের আমানত শেয়ারে রূপান্তরের বিষয়টি এখনো কেবল ধারণা পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে আরিফ হোসেন খান বলেন, ভবিষ্যতে ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হলে পরিচালনা পর্ষদ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এটি কোনোভাবেই বাধ্যতামূলক হবে না; বরং আগ্রহীদের জন্য একটি ঐচ্ছিক বিকল্প হিসেবে রাখা হবে।

এ ছাড়া সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের লোগো বাংলাদেশ ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে সরবরাহ করা হবে বলেও জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র।

এমজে/

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত