ঢাকা, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

সারজিস আলমের সভাস্থলে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ

২০২৫ অক্টোবর ২০ ১৯:১২:৩৪

সারজিস আলমের সভাস্থলে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কর্মসূচির সময় অডিটোরিয়ামের নিচতলায় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার বিকেলে জেলা পরিষদ মিলনায়তন চত্বরে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভার চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।

ঘটনার সময় অডিটোরিয়ামের পাশে সংগঠনের জেলা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। সূত্রে জানা যায়, করতোয়া নদীর পাশ থেকে দু’টি ককটেল নিক্ষেপ করা হলে তা জেলা পরিষদ চত্বরে এসে পড়ে। প্রথম ককটেলটি বিস্ফোরিত হয়নি; কিন্তু দ্বিতীয়টি বিকট শব্দ করে বিস্ফোরিত হয় এবং অডিটোরিয়ামের নিচতলায় পড়ে ক্ষতিসাধন করে। পরে পুলিশ অবিস্ফোরিত ককটেলটি উদ্ধার করে।

এই ঘটনার পর উপস্থিতরা চাঞ্চল্য ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এনসিপির নেতাকর্মীরা দ্রুত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেন এবং হামলার তীব্র নিন্দা জানান। ঘটনাস্থলে সদর থানার পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইম সিন সদস্যরা এসে তদন্ত শুরু করেন এবং দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানানো হয়।

ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সারজিস আলম ওই হামলার দায় দিয়ে বলেছেন, এটি ফ্যাসিস্টদের চালানো একটি পরিকল্পিত কৌশল এবং তিনি সরকারের কাছে ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের ‘আস্ফালন’ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এমন কড়া হামলা দেশের নির্বাচনি ও রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান জানান, এনসিপির অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে ককটেলসদৃশ বস্তু বিস্ফোরিত হয়েছে এবং ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দল বিষয়টি তদন্তে নিয়োজিত আছে। তিনি বলেন, যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও জেলা এনসিপির সংগঠক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, সারজিস আলম জয়পুরহাটের সমন্বয় সভা শেষে বিকাল তিনটার দিকে বগুড়ায় এসে জেলা শাখা কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন এবং পরে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে যোগ দেন। সভার শুরু হওয়ার পর পেছনের দিকে থাকা করতোয়া নদীর দিক থেকে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।

এনসিপি নেতারা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা দাবি করেন অনুষ্ঠানটির পূর্ব ঘোষণার পরও প্রশাসন নিরাপত্তার ব্যবস্থা যথাযথভাবে করেনি এবং এ কারণেই ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসররা এ হামলা চালাতে পেরেছে। নেতারা দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সারজিস আলম বলেন, এনসিপি একটি বড় সাংগঠনিক দল; কিছু জেলায় প্রশাসন তাদের ভালো নিরাপত্তা দিয়েছে, আবার কোথাও অনীহা দেখা গেছে। তিনি প্রশাসনের লোকদের নিরপেক্ষ থাকতে অনুরোধ করে বলেন, পুলিশ-গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে যেসব সদস্য ফ্যাসিস্টদের সহায়তা করে তাদের শনাক্ত ও শাস্তি করা উচিত, নইলে দেশের নিরাপত্তা ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বগুড়া সদর থানা ওসি হাসান বাসীর জানান, ঘটনা তদন্তের জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে এবং তদন্ত শেষে দোষীদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না; দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত