ঢাকা, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২

বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় গভর্নরকে বিএসইসি’র চিঠি

২০২৫ অক্টোবর ১২ ১৮:৫৫:২৫

বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় গভর্নরকে বিএসইসি’র চিঠি

হাসান মাহমুদ ফারাবী: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি ইসলামি বাণিজ্যিক ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রসঙ্গে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি।

বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়, একীভূতকরণের সিদ্ধান্তে যেখানে আমানতকারীদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে, সেখানে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর সাধারণ শেয়ারহোল্ডার বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার কোনো দিকনির্দেশনা নেই। তাই বিনিয়োগকারীদের আর্থিক ক্ষতি ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ‘ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুযায়ী, একীভূত ব্যাংকে পুরনো শেয়ারহোল্ডাররা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। নতুন ব্যাংক শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হবে, কিন্তু সেখানে বিদ্যমান পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের শেয়ার থাকবে না। নতুনভাবে ইস্যু করা শেয়ার দিয়েই নতুন ব্যাংকের মূলধন গঠন করা হবে।

তবে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামি ধারার এই পাঁচ ব্যাংকের বর্তমান সংকটের জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দায়ী নন। বরং দায়ী উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা, যাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও তারল্য সংকট তৈরির অভিযোগ আছে। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দায় নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। তাদের প্রশ্ন— সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোনো দায় না থাকলে কেন তাদের বিনিয়োগ শূন্যে পরিণত হবে?

এ প্রেক্ষাপটে বিএসইসি তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেছে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবং এক্সিম ব্যাংক পিএলসির একীভূতকরণে বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চিঠিতে বিএসইসি চারটি নির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে—

• ব্যাংকগুলোর লাইসেন্স, ব্র্যান্ড ভ্যালু, ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্ক, ক্লায়েন্ট বেজ ও মানবসম্পদসহ সামগ্রিক সম্পদমূল্য পুনর্মূল্যায়ন করে বিনিয়োগকারীর অংশ নির্ধারণ করা।• ব্যাংকের ঋণ জামানত, দায়ী ব্যক্তিপণ ও তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিবেচনায় এনে বিনিয়োগকারীর স্বার্থমূল্য নির্ধারণ করা।

• ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ-২০২৫ এর ধারা ৭৭ অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তি ছাড়া অন্য সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ন্যূনতম ক্ষতিপূরণমূল্য নির্ধারণ করা।

• বিনিয়োগকারীর স্বার্থমূল্য অনুপাত নির্ধারণ ও ঘোষণা না করে কোনো ব্যাংককে তালিকাচ্যুত না করার অনুরোধ জানানো।

বিএসইসি মনে করে, একীভূত ব্যাংকের তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হলে শেয়ারবাজারে আস্থা আরও ভেঙে পড়বে। তাই সরকার যেমন আমানতকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে, তেমনি শেয়ারহোল্ডারদেরও একই গুরুত্ব দেওয়া জরুরি বলে কমিশন মনে করে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত