ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২

গাজা যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের প্রস্তাব পরিবর্তন, মুসলিম নেতারা অবাক

২০২৫ অক্টোবর ০২ ০০:২৪:৪৯

গাজা যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের প্রস্তাব পরিবর্তন, মুসলিম নেতারা অবাক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধে কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করে আসছিলেন আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতারা। দুই সপ্তাহ আগে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ট্রাম্পের সঙ্গে ৮ মুসলিম নেতা বৈঠক করে যুদ্ধবিরতির একটি কাঠামো প্রস্তুত করেছিলেন। তবে গত সোমবার দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদের দেওয়া সেসব কথা বদলে ফেলেছেন।

সংবাদমাধ্যম মিডেল ইস্ট আই বুধবার (১ অক্টোবর) জানিয়েছে, ট্রাম্প সেদিন ২০ দফার যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ঘোষণা করেন, তা আরব নেতাদের দেখানো দফাগুলোর চেয়ে অনেক ভিন্ন ছিল। এমন পরিবর্তন দেখে মধ্যপ্রাচ্যের নেতারা বেশ অবাক হয়েছেন।

সবচেয়ে বড় পরিবর্তনগুলোর মধ্যে ছিল যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির সংখ্যা কমানো এবং ধাপে ধাপে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করার বিষয়টি। একটি সূত্র জানিয়েছে, ট্রাম্প নেতানিয়াহুর ইচ্ছা অনুযায়ী ধারাগুলোতে পরিবর্তন এনেছেন।

আগের খসড়া চুক্তিতে বলা হয়েছিল, যুদ্ধবিরতি হলে কয়েকশ দণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজা থেকে ধরে আনা ১ হাজার ৭০০ নারী-পুরুষ-শিশুকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন প্রস্তাবে মাত্র ২৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা আরব নেতাদের কল্পনারও বাইরে ছিল।

এছাড়া, আরব নেতাদের ট্রাম্প জানিয়েছিলেন যে, প্রতিদিন গাজায় ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে এ সংক্রান্ত কোনো স্পষ্ট কথা নেই, যার অর্থ দখলদাররা চাইলে যুদ্ধবিরতির পরও ত্রাণের ট্রাক আটকে রাখতে পারবে।

শাসন ব্যবস্থাতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন প্রস্তাবে ট্রাম্প বলেছেন গাজা শাসন করবে ‘বোর্ড অব পিস’, যার প্রধান হবেন তিনি নিজে এবং সহ-প্রধান হবেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। অর্থাৎ ট্রাম্প নিজেই গাজার ক্ষমতা নিচ্ছেন, এতে গাজা শাসনে আন্তর্জাতিক পরামর্শের আর কোনো সুযোগ থাকবে না।

আগের প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক স্থিতিকরণ বাহিনী নামে একটি বাহিনী তৈরি করার কথা বলা হয়েছিল, যেটি ফিলিস্তিনি পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেবে। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে এমন ধারা দেওয়া হয়েছে, যেটি গাজার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে রাখবে।

তুরস্ক, মিসর এবং জর্ডান গাজায় ট্রাম্পের প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনে বিশেষ ভেটো দিয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও দেশগুলো মনে করছে ট্রাম্পের কাছ থেকে তারা অনেক ছাড় আদায় করে নিতে পেরেছেন। যেমন— গাজার মানুষ গাজাতেই থাকবেন, তাদের অন্য কোথাও পাঠানো হবে না, ইসরায়েলও এতে সম্মত হয়েছে। এছাড়া দখলদার ইসরায়েল কথা দিয়েছে তারা স্থায়ীভাবে গাজা দখল করবে না।

মিডেল ইস্ট আই জানিয়েছে, আগের প্রস্তাবের তুলনায় নতুন প্রস্তাবে এত বড় পরিবর্তন থাকলেও আরব দেশগুলো হামাসকে এ প্রস্তাব মেনে নিতে চাপ দিচ্ছে, কারণ এতে করে অন্তত গাজার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বন্ধ হবে।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত