ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২

কারসাজি ও গুজব ঠেকাতে

উৎপাদন বন্ধ ৩০ কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে ডিএসই

মোবারক হোসেন
মোবারক হোসেন

সিনিয়র রিপোর্টার

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ০০:০৫:২২

উৎপাদন বন্ধ ৩০ কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে ডিএসই

মোবারক হোসেন: প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) দেশের উৎপাদন খাতের বছরের পর বছর ধরে বন্ধ থাকা ৩০টি কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় রয়েছে দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিও। এই প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহ করলেও দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।

ডিএসই’র এই উদ্যোগটি মূলত বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করার জন্য নেওয়া হয়েছে। অনেক সময় এসব বন্ধ কোম্পানিকে নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়ানো হয়, যার ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত হন এবং শেয়ারের দাম কারসাজির শিকার হন। ডিএসই’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই তালিকাটি বিনিয়োগকারীদের কোম্পানিগুলোর প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে তথ্য দেবে। ডিএসইর ইতিহাসে এটি এ ধরনের প্রথম পদক্ষেপ।

এই তালিকায় নতুন করে যোগ হয়েছে হ্যামিদ ফ্যাব্রিক্স। টেক্সটাইল কোম্পানিটি ২২ সেপ্টেম্বর কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে পর্যাপ্ত গ্যাস চাপ না থাকার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সিএনজি ও এলএনজি ব্যবহার করার চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি উন্নত হয়নি। লেবার আইন ২০০৬ এবং বাংলাদেশ লেবার রুলস ২০১৫ এর সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী ২২ জুন থেকে ফ্যাক্টরিটি লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। গ্যাস সংকট সমাধানের পর উৎপাদন পুনরায় শুরু হবে।

এর আগে ১২ আগস্ট রহিমা ফুড কর্পোরেশনও কেশু বাদাম প্রক্রিয়াকরণ এবং নারকেল তেল উৎপাদন বন্ধ করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, বাজারে আকার গ্রহণ না করতে পারার কারণে ১২ আগস্ট তাদের নারকেল তেল ও কেশু বাদাম প্রক্রিয়াকরণ স্থগিত করা হয়েছে। কোম্পানি বলেছে, “এটি একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। দীর্ঘমেয়াদি টেকসইতা নিশ্চিত করার জন্য উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।”

ডিএসইর প্রকাশিত তালিকায় অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এর মধ্যে একটি কোম্পানি ২০০২ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে।

এছাড়াও, বিএসইসি-এর নির্দেশনায় ছয় মাসের বেশি সময় ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকায় বারাকা পাওয়ার এবং জাহীণ স্পিনিং মিলস-কে 'জেড' ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তালিকাভুক্ত বন্ধ কোম্পানির তালিকা—

অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স, অ্যারামিট সিমেন্ট, আজিজ পাইপস, বারাকা পাওয়ার, দুলামিয়া কটন, এমারাল্ড অয়েল, ফ্যামিলি টেক্স (বিডি), জিবিবি পাওয়ার, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ, মেট্রো স্পিনিং মিলস, মিথুন নিটিং, নিউ লাইন ক্লথিংস, নর্দার্ন জুট, নুরানি ডায়িং, প্রাইম টেক্সটাইল, আরএসআরএম, রেজেন্ট টেক্সটাইল, সুহ্নিদ ইন্ডাস্ট্রিজ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, টাং হাই নিটিং, ইয়াকিন পলিমার, জাহিন স্পিনিং মিলস এবং দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান—শ্যাম্পুর সুগার মিলস ও উসমানিয়া গ্লাস শীট ফ্যাক্টরিজ।

এ বিষয়ে ডিএসইর এক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বলেন, বন্ধ কোম্পানির তালিকা প্রকাশের মূল উদ্দেশ্য হলো বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা। কারণ বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা না জেনে গুজবের শিকার হয়ে শেয়ার দরের ওঠানামায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীরা এই তথ্য থেকে বঞ্চিত। এখন প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা নিজের দায়িত্বে এবং ঝুঁকিতে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

এএসএম/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত