ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২
ঢাবি অ্যালামনাই: ৭৭ বছরের ইতিহাস, সামনে করণীয়

ড. মো শরীফুল ইসলাম দুলু
নির্বাহী কমিটির সদস্য, ডুয়া

ড. মো শরীফুল ইসলাম দুলু
ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (ডুয়া) ৭৭ বছরে পা দিল। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এই সংগঠনটি বাংলাদেশের ইতিহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধ, গণতান্ত্রিক আন্দোলন, নীতি প্রণয়ন—সবখানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ছিলেন সামনের সারিতে। ডুয়া সেই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে, এক ছাতার নিচে এনেছে অসংখ্য মন্ত্রী, আমলা, উদ্যোক্তা, শিক্ষাবিদ ও সৃজনশীল ব্যক্তিত্বকে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই দীর্ঘ পথচলায় আমরা আসলে কতটা এগিয়েছি, আর সামনে কী করণীয়?ডুয়া গত কয়েক দশকে যা অর্জন করেছে তা অবশ্যই গর্ব করার মতো। প্রাক্তনদের পুনর্মিলনী আয়োজন, সামাজিক সংযোগ শক্তিশালী করা, নানা ধরনের সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান—সবই সংগঠনের পরিচিত কাজ। তবু, সময়ের দাবি এখন আরও বড়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ গবেষণা তহবিল সংকটে ভুগছে, বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে আছে, শিল্প-কারখানার সঙ্গে সংযোগ দুর্বল। অথচ ডুয়া'র হাতে এমন এক শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আছে যা চাইলে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অ্যালামনাইরা গবেষণায় অর্থায়ন করতে পারেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়াতে পারেন। দেশের ব্যবসায়ী ও কর্পোরেট অ্যালামনাইরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপ ও চাকরির পথ খুলে দিতে পারেন।
অন্যদিকে, সংগঠনের ভেতরে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা এবং অন্তর্ভুক্তি আরও জোরদার করা দরকার। ডুয়া অনেক সময় প্রভাবশালী রাজনৈতিক বা সামাজিক মহলের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ থেকে গেছে—ফলে সাধারণ সদস্যদের অংশগ্রহণ কমেছে। নতুন প্রজন্মের অ্যালামনাইকে যুক্ত করতে হলে তাদের জন্য স্কলারশিপ, মেন্টরশিপ, স্টার্টআপ সাপোর্ট ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা জরুরি।
৭৭ বছর পূর্তি তাই শুধু উৎসব নয়, এক ধরনের স্টার্ট বাটন। সামনে কিছু স্পষ্ট করণীয় আছে—
* একটি রোডম্যাপ তৈরি করা: আগামী ১০ বছরকে সামনে রেখে শিক্ষা, গবেষণা ও সামাজিক অবদানের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ। * ইন্ডাস্ট্রি-ইউনিভার্সিটি সংযোগ জোরদার করা: ব্যবসায়ী অ্যালামনাইদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থান ও স্কিল ডেভেলপমেন্টে বিনিয়োগ।
* ডিজিটাল সংযোগ: বিশ্বব্যাপী অ্যালামনাইদের জন্য একটি একক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি।
* ইনোভেশন ও নীতি নির্ধারণে ভূমিকা: উচ্চশিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন নিয়ে জাতীয় আলোচনায় ডুয়া কে প্রভাবশালী থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক হিসেবে গড়ে তোলা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেবল একটি প্রতিষ্ঠান নয়, এটি বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের মস্তিষ্ক। আর ডুয়া সেই মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র। ৭৭ বছর পূর্তিতে সময় এসেছে সেই স্নায়ুতন্ত্রকে আরও সক্রিয় করার, যাতে এটি বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের উন্নয়নে আরও গভীর অবদান রাখতে পারে।
লেখক: কলামিষ্ট ও লেখক
সাবেক সাধারণ সম্পাদক
ঢাবি মার্কেটিং বিভাগ অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশন
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান,সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- এশিয়া কাপ: পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- উৎপাদন বন্ধ ৩০ কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে ডিএসই
- তালিকাচ্যুত হচ্ছে পাঁচ ব্যাংক, বলির পাঠা শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা!
- শেয়ারবাজারের ১২ কোম্পানির ২ হাজার কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ
- সিটি ব্যাংক পোর্টফোলিও ম্যানেজারের শেয়ার জালিয়াতি, তদন্তে বিএসইসি
- যেভাবে পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে
- এনবিআর-এর ক্যাশ গেইন প্রতিক্রিয়া অতিরঞ্জিত: আনিসুজ্জামান চৌধুরী
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ৬ কোম্পানিতে
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- নতুন দিগন্তে বেক্সিমকো, শেয়ারবাজারে আশার আলো
- ডিভিডেন্ড ঘোষণার তারিখ জানাল তিন কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর নতুন আবেদন
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু সিরামিক
- ঝড়ের গতিতে উত্থান, রকেটের গতিতে পতনের শেয়ার