ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২

তরুণরাই পরিবর্তনের চালিকাশক্তি, তবে তারাই সংকটের শিকার: প্রধান উপদেষ্টা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৫ ২২:২০:২৬

তরুণরাই পরিবর্তনের চালিকাশক্তি, তবে তারাই সংকটের শিকার: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন যে, বিশ্বব্যাপী তরুণরা পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনও অসমতা, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, সুরক্ষাবাদ ও ডিজিটাল বিভাজনের মতো সংকটের প্রথম শিকার। বিশেষত, যুব বেকারত্ব একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে, যা নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় চারগুণ বেশি। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, তরুণরা নিজেদের, পৃথিবী ও ভবিষ্যতের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে, যদি তাদের সুযোগ দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যুবকদের জন্য বিশ্ব কর্মপরিকল্পনার (ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন ফর ইয়ুথ) ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বক্তৃতাকালে ড. ইউনূস এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ছিল আন্তঃপ্রজন্ম সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা।

ড. ইউনূস তার বক্তৃতার শুরুতে বলেন যে, ৮৫ বছর বয়সে এসে তিনি এই প্রতিপাদ্যের তাৎপর্য গভীরভাবে উপলব্ধি করছেন। গত বছর বাংলাদেশে যুবসমাজের অসাধারণ শক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "তারা সাহসিকতার সঙ্গে স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে জাতিকে নতুন পথে পরিচালিত করেছে এবং আমাকে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দায়িত্ব দিয়েছে।"

প্রযুক্তির ইতিবাচক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস জানান, বাংলাদেশে জাতীয় যুব উদ্যোক্তা নীতি চালু করা হয়েছে, যার লক্ষ্য তরুণদের অর্থায়ন, দক্ষতা উন্নয়ন ও বাজারে প্রবেশের সুযোগ দিয়ে চাকরিপ্রার্থী নয় বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী হিসেবে গড়ে তোলা। এছাড়াও, সংস্কার কমিশনগুলোতে যুবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে এবং জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা চালু করা হয়েছে যাতে দেশের গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনে তরুণদের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত হয়।

বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে মুখ্য উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বব্যাপী আমরা যুবদের জন্য কর্মপরিকল্পনা, ফ্যাক্ট ফর দ্য ফিউচার, জাতিসংঘ যুব কৌশল ২০৩০ এবং ইয়ুথ, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি এজেন্ডাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। তিনি强调 করেন যে, কোনো দেশ একা যুব ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারবে না। বৈশ্বিক সহযোগিতা ছাড়া প্রতিবন্ধকতা দূর করা, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং আন্তঃপ্রজন্ম নেতৃত্ব তৈরি করা সম্ভব নয়, অন্যথায় হতাশা দ্রুত অস্থিরতায় রূপ নেবে। তিনি উপসংহারে বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ একা বহন করতে হবে না; কেবল তরুণদের তাদের ন্যায্য অংশ, নিরাপদ পরিসর ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা দিতে হবে।

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত