ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২
তালিকাচ্যুত হচ্ছে পাঁচ ব্যাংক, বলির পাঠা শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা!

হাসান মাহমুদ ফারাবী:

হাসান মাহমুদ ফারাবী:দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি ইসলামিক ব্যাংক একীভূত হয়ে গঠিত হতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। তবে একীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এসব ব্যাংক শেয়ারবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হবে। বর্তমানে ব্যাংক কোম্পানি আইনে শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণের কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি এক বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় রাখছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসি।
আমানতকারীরা সুরক্ষিত, বিনিয়োগকারীরা উপেক্ষিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এই পাঁচ ব্যাংকের মোট আমানত প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা এবং ঋণের পরিমাণ ২ লাখ কোটি টাকার বেশি। ব্যক্তি আমানতকারীদের ৪৬ হাজার কোটি টাকা ফেরত নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ পরিকল্পনা করেছে। এমনকি প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীরাও নতুন ব্যাংকের শেয়ার পেতে পারেন। কিন্তু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো সুরক্ষার কথা এখনো বলা হয়নি।
শেয়ারের দর ভেঙে পড়েছে
একীভূতকরণের খবরে শেয়ারবাজারে ইতিমধ্যেই বড় ধাক্কা খেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। যেসব শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা, সেগুলো এখন ৫ টাকার নিচে নেমে গেছে। অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মূলধনের অর্ধেকের বেশি হারিয়ে ফেলেছেন। যারা আরও বেশি দামে এসব শেয়ার কিনেছিলেন, তাদের অবস্থা আরও করুণ। বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করছেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নানা কৌশলে তাদের ক্ষতি সামাল দিতে সক্ষম হলেও ক্ষুদ্র ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এই লোকসান পুষিয়ে নেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে
ব্যাংকগুলোর শেয়ার ধারণ
এক্সিম ব্যাংক: মূলধন ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩০.২৮ শতাংশ শেয়ার।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক: মূলধন ৯৮৭ কোটি টাকা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩১.৪৬ শতাংশ শেয়ার।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক: মূলধন ১,২০৮ কোটি টাকা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬৫.০৪ শতাংশ শেয়ার—সবচেয়ে বেশি।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক: মূলধন ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৭.৯২ শতাংশ শেয়ার।
ইউনিয়ন ব্যাংক: মূলধন ১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩০.৯৩ শতাংশ শেয়ার।
ক্ষতিপূরণের আলোচনায় ধোঁয়াশা
যদিও অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা করা যায় কি না তা নিয়ে চিন্তা করছে, এখনো কোনো প্রস্তাব বা নিশ্চয়তা নেই। বিএসইসি’র সঙ্গে যৌথ বৈঠক করার পরিকল্পনা থাকলেও ফলাফল অনিশ্চিত। এ বিষয়ে বিএসইসির কার্যকর ভূমিকা প্রত্যাশা করেন বিনিয়োগকারীরা। কারণ ব্যাংকগুলোর বিপর্যয়ে বিনিয়োগকারীদের কোন ভূমিকা ছিল না। তাহলে তারা কেন ক্ষতির দায়ভার গ্রহণ করবে?শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের দাবি, তারা যেন কোনভাবেই অনাহুত ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। এ বিষয়ে সরকারের বিশেষ মনোযোগ প্রত্যাশা করেন তারা।
এই ব্যাংকগুলোর বেহাল দশা পুরো ব্যাংক খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র ডজনখানেক ব্যাংকের শেয়ার এখন অভিহিত মূল্য ১০ টাকার উপরে লেনদেন হচ্ছে। এমনকি সিটি ব্যাংকের মতো লাভজনক ব্যাংকও শেয়ারবাজারে ভালো করতে পারছে না। ২০২৪ অর্থবছরে এক হাজার কোটি টাকা মুনাফার ক্লাবে যোগ দেওয়ার পরও সিটি ব্যাংকের শেয়ার ২৫ টাকায় আটকে আছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার অভাবের প্রতিফলন।
এএসএম/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান,সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- এশিয়া কাপ: পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- উৎপাদন বন্ধ ৩০ কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে ডিএসই
- তালিকাচ্যুত হচ্ছে পাঁচ ব্যাংক, বলির পাঠা শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা!
- শেয়ারবাজারের ১২ কোম্পানির ২ হাজার কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ
- সিটি ব্যাংক পোর্টফোলিও ম্যানেজারের শেয়ার জালিয়াতি, তদন্তে বিএসইসি
- যেভাবে পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে
- এনবিআর-এর ক্যাশ গেইন প্রতিক্রিয়া অতিরঞ্জিত: আনিসুজ্জামান চৌধুরী
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ৬ কোম্পানিতে
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- নতুন দিগন্তে বেক্সিমকো, শেয়ারবাজারে আশার আলো
- ডিভিডেন্ড ঘোষণার তারিখ জানাল তিন কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর নতুন আবেদন
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু সিরামিক
- ঝড়ের গতিতে উত্থান, রকেটের গতিতে পতনের শেয়ার