ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২
সাত খাতের শেয়ারে ভরাডুবি, বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ

মোবারক হোসেন
সিনিয়র রিপোর্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার সূচকের বড় পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪২.৪১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৪৯.৯২ পয়েন্টে নেমে এসেছে। দিন শেষে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০৩টির দাম কমেছে, বেড়েছে মাত্র ৪৪টির। এই পতন বাজারের সার্বিক পরিস্থিতিকে আরও চাপগ্রস্ত করে তুলেছে।
এদিনের লেনদেনে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে ২০টি খাতের মধ্যে সাতটিতে। এই খাতগুলোতে তালিকাভুক্ত প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, যা বাজারের দুর্বলতাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। যে সাতটি খাতে শতভাগ পতন হয়েছে, সেগুলো হলো—পেপার ও প্রিন্টিং, সেবা ও আবাসন, টেলিযোগাযোগ, ভ্রমণ ও অবকাশ, সিরামিক, সিমেন্ট এবং পাট। এই খাতগুলোর মোট ৩৩টি কোম্পানির সবগুলোই পতনের শিকার হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার অভাবকে ইঙ্গিত করে।
অন্যান্য খাতগুলোতেও পতনের ঢেউ লক্ষ্য করা গেছে। জীবন বিমা খাতের ১৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টির, সাধারণ বিমা খাতের ৪৩টির মধ্যে ৪০টির এবং ফার্মা ও রসায়ন খাতের ৩৪টির মধ্যে ৩০টির শেয়ারের দাম কমেছে। এই ব্যাপক দরপতন বাজারের বেশিরভাগ খাতের দুর্বল অবস্থাকে প্রতিফলিত করে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করে।
তবে এই নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্যেও কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। আজ লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৪৪টির দাম বেড়েছে এবং ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে, যা প্রমাণ করে বাজারের কিছু অংশে এখনো স্থিতিশীলতা রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এবং তাদের খাতগুলো বাজারের সামগ্রিক পতনের মধ্যেও নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে।
বিশেষ করে, বস্ত্র এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাত এই পতনের স্রোতে কিছুটা ভালো পারফর্ম করেছে। বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ১৩টির এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১টির মধ্যে ৫টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। এই খাতগুলোর পারফরম্যান্স ইঙ্গিত দেয় যে, বাজারের বর্তমান দুর্বলতা সাময়িক হতে পারে এবং কিছু নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগের সুযোগ এখনো বিদ্যমান।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও বৃহস্পতিবারের বাজার পরিস্থিতি কিছুটা হতাশাজনক, তবুও এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, বাজারে এমন অস্থিরতা প্রায়ই ঘটে থাকে। তবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য ভালো মৌলভিত্তির এবং নির্ভরযোগ্য কোম্পানির শেয়ারে আস্থা রাখা উচিত। বাজারের এই চাপ সাময়িক। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বাজারকে স্থিতিশীল করতে কাজ করছে। তাই, গুজবে কান না দিয়ে প্রকৃত তথ্যের ভিত্তিতে এবং ধৈর্য ধরে বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে যাওয়া উচিত।
এএসএম/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাভেলোর শেয়ার কারসাজি: তিন বিও অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড কার্যকারিতায় বিএসইসির নতুন উদ্যোগ
- শেয়ারবাজারে ইতিহাস গড়লেন ‘ছাগল-কাণ্ডের’ সেই মতিউর
- শেয়ারবাজারে হঠাৎ দরপতন, নেপথ্যে এনবিআরের চিঠি
- একাদশে ভর্তি: চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মুনাফা চান? জেনে নিন ৫ মন্ত্র
- ডিভিডেন্ড বৃদ্ধির আলোচনায় জ্বালানি খাতের ১১ কোম্পানি
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- মালিকানায় পরিবর্তন আসছে ইয়াকিন পলিমারের
- এক শেয়ারের জোরেই সবুজে ফিরল শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড দোলাচলে তথ্যপ্রযুক্তির ৮ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- সোনালী পেপারের কারসাজিতে জেনেক্স ইনফোসিসের পরিচালকদের জরিমানা
- চার কোম্পানির আর্থিক অনিয়মের দায়ে নিষিদ্ধ হচ্ছে ৬ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান