ঢাকা, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

বিএফআইইউর সাবেক প্রধান শাহীনুলের অর্থ পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ০০:৪৭:৫০

বিএফআইইউর সাবেক প্রধান শাহীনুলের অর্থ পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সদ্য নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে কানাডায় অর্থ পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে, তিনি কানাডায় তার মেয়ের কাছে একটি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৮০ হাজার ৯৩৫ টাকা পাচার করেছেন, যা তার আয়কর রিটার্নে গোপন করা হয়েছে।

এএফএম শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, কর ফাঁকি এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ খতিয়ে দেখার সময় এই অপরাধের সন্ধান মিলেছে। আয়কর গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, শাহীনুল ইসলাম তার মেয়ের কাছে বিপুল অঙ্কের টাকা পাঠিয়েছেন, যার একটি বড় অংশ তার আয়কর ফাইলে উল্লেখ নেই। এছাড়াও, তার নামে একাধিক ব্যাংকের একাধিক ক্রেডিট কার্ডে প্রচুর লেনদেন এবং বিকাশ ও রকেট অ্যাকাউন্টেও বিপুল লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তদন্তে আরও জানা যায়, শাহীনুল ইসলাম অবৈধ আয় গোপন করতে তার স্ত্রীর নামে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী, রমনায় ১ হাজার ১০৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। আয়কর ফাইলে ওই ফ্ল্যাটের দলিল মূল্য ৩১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেখানো হলেও, তদন্তে ফ্ল্যাটটির প্রকৃত মূল্য প্রায় ৭১ লাখ টাকা বা তারও বেশি বলে প্রমাণিত হয়েছে। তার স্ত্রী সুমা ইসলামের টিআইএন নম্বর থাকলেও তিনি কখনো আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি। বর্তমানে তারা শ্বশুরের কেনা একটি ফ্ল্যাটে থাকেন, তবে শ্বশুরও কখনো আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি এবং ফ্ল্যাটের প্রকৃত মূল্য গোপন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শাহীনুল ইসলামের আয়কর ফাইলে এফডিআরের কোনো তথ্য না থাকলেও ব্যাংকে তার একাধিক এফডিআর পাওয়া গেছে। এসব তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, অবৈধ অর্থ বৈধ করার জন্যই তিনি স্ত্রী ও শ্বশুরের নামে সম্পদ লুকিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউয়ের প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের নিয়োগ বাতিল করেছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা ভিডিও কেলেঙ্কারি ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। এই ঘটনার পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিতর্কিত ব্যবসায়ী খন্দকার এনায়েত উল্লাহর ফ্রিজ করা অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেন শাহীনুল ইসলাম। এছাড়া তার নিজস্ব ও স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবেও অস্বাভাবিক নগদ জমার প্রমাণ মেলে। আপত্তিকর ভিডিওর ফরেনসিক পরীক্ষাতেও এর সত্যতা নিশ্চিত হয়েছিল।

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত

জাকসুর নবনির্বাচিত নেতৃত্বকে ডাকসুর শুভেচ্ছা

জাকসুর নবনির্বাচিত নেতৃত্বকে ডাকসুর শুভেচ্ছা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু)-এর নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর,... বিস্তারিত