ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২

জমি দখল বা উচ্ছেদের চেষ্টা: তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ

সরকার ফারাবী
সরকার ফারাবী

সাব-এডিটর

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ১৯:২৮:৪৮

জমি দখল বা উচ্ছেদের চেষ্টা: তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ

বাংলাদেশে ভূমি অধিকার সুরক্ষায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এখন থেকে জমি দখল বা উচ্ছেদের শিকার কেউ আর দীর্ঘসূত্রী দেওয়ানি মামলার ঝামেলায় পড়বেন না। ২০২৩ সালের ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’ এবং ২০২৪ সালের সংশ্লিষ্ট বিধিমালা কার্যকর হওয়ায় প্রকৃত জমির মালিকরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দ্রুত ও কার্যকর প্রতিকার পেতে পারবেন।

জমি দখল বা উচ্ছেদ হলে কি করবেন?

ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের ৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে কেউ যদি আপনার বৈধ মালিকানাধীন জমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করতে বা দখল নিতে চেষ্টা করে, তাহলে আপনি সরাসরি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের সঙ্গে জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় দলিলপত্র, খতিয়ান, নামজারি সনদ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র জমা দিতে হবে। আবেদন নিজে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে দাখিল করা যাবে। এ আবেদন অবশ্যই নির্ধারিত ফরমে করতে হবে, যা ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিধিমালা, ২০২৪ অনুযায়ী তৈরি।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভূমিকা কী?

১) অভিযোগ প্রাপ্তির পর অপর পক্ষকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ প্রদান করবেন।

২) প্রয়োজনে সরেজমিন তদন্ত বা সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জমি যাচাই করবেন।

৩) যাচাই শেষে যথাযথ আদেশ দিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করবেন।

জরুরি অবস্থায় ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা

১) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দখলদারকে উচ্ছেদ করে জমির দখল প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারবেন।

২) আদেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হবে।

৩) ভবিষ্যতে জমি দখল রোধে বন্ড নেওয়ারও বিধান রয়েছে।

নিষ্পত্তির সময়সীমা

আইন অনুযায়ী, জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগ ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। তবে জমি যদি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া হয় বা বণ্টন না হয়ে থাকে, কিংবা দেওয়ানি আদালতে মামলা চলমান থাকে, সেই ক্ষেত্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। তখন দেওয়ানি আদালতে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মোবাইল কোর্টের আবেদন করা যাবে।

কেন এই আইন গুরুত্বপূর্ণ?

আগে জমি দখল বিরোধ নিষ্পত্তিতে অনেক সময় এবং খরচ হয় দীর্ঘসূত্রী দেওয়ানি মামলার কারণে। নতুন আইন বাস্তবায়নের ফলে সাধারণ মানুষ দ্রুত ন্যায্যতা পাচ্ছে এবং ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এটি ভূমি অধিকার রক্ষায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশেষ পরামর্শ

জমি সংক্রান্ত সকল দলিল ও দস্তাবেজ সর্বদা প্রস্তুত রাখা জরুরি। সমস্যার শুরুতেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে দ্রুত ও সুষ্ঠু প্রতিকার পাওয়া যায়।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত