ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ ভাদ্র ১৪৩২
এআই দাপট: চাকরি পাচ্ছেন না তরুণ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দ্রুত অগ্রগতি ও আর্থিক মন্দার কারণে প্রযুক্তি খাতে চাকরির সুযোগ দিন দিন কমছে। বিশেষ করে জুনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য পরিস্থিতি হয়ে উঠছে আরও কঠিন। সাম্প্রতিক স্নাতকদের বেকারত্বের হার এখন সারা যুক্তরাষ্ট্রের গড় বেকারত্বের চেয়ে বেশি, যা নতুনদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির ব্লুমফিল্ড কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স ও গেম প্রোগ্রামিংয়ে ডিগ্রি পাওয়া আব্রাহাম রুবিও ছোটবেলা থেকেই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। মাইনক্রাফট গেমে মড তৈরি করার শখ থেকে তার কোডিংয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। তবে ডিগ্রি পাওয়ার পর টানা কয়েক মাসে ২০টিরও বেশি চাকরির জন্য আবেদন করেও তিনি কোনো অফার পাননি। রুবিওর মতো এমন বাস্তবতার মুখে পড়েছেন আরও অনেক নতুন স্নাতক।
রুবিও বলেন, “আমি প্রায় প্রতিদিন লিংকডইনে গিয়ে সুযোগ খুঁজি, কিন্তু বেশিরভাগ কোম্পানি থেকে কোনো সাড়া মেলেনি।” এলমস কলেজের জুলিও রদ্রিগেজও একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তিনি একটি চাকরি পাওয়ার আগে ১৫০টিরও বেশি আবেদন করেছিলেন।
অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের মে মাসের রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালের পর থেকে কম্পিউটার সায়েন্স ও ম্যাথমেটিক্স বিষয়ে নতুন স্নাতকদের কর্মসংস্থান প্রায় ৮ শতাংশ কমেছে। আর ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব সেন্ট লুইস জানিয়েছে, চাকরি খোঁজার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ইন্ডিড’-এ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট চাকরির বিজ্ঞাপন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত ৭১ শতাংশ কমে গেছে।
প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট সম্প্রতি ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারমূল্য অর্জনের পরও তাদের তৃতীয় দফায় ৯ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। সিইও সত্য নাদেলা জানিয়েছেন, বর্তমানে কোম্পানির প্রায় ৩০ শতাংশ কোড এআই দিয়ে লেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এআই শুধু কোড লেখার প্রক্রিয়াই পরিবর্তন করছে না, নিয়োগ নীতিতেও প্রভাব ফেলছে। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স পরিচালক ম্যাগডালেনা বালাজিনস্কা বলেন, কোম্পানিগুলো এখন বড় এআই প্রজেক্টে বিনিয়োগ করছে, ফলে জুনিয়র লেভেলে নিয়োগ কমছে। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এআই-ভিত্তিক নতুন কোর্স চালু করছে। তবে প্রাথমিক ক্লাসে এআই ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
অন্যদিকে কোডিং বুটক্যাম্পগুলোও নিজেদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে। ‘জেনারেল অ্যাসেম্বলি’র সিইও ড্যানিয়েল গ্রাসি জানান, এখন শুধু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নয়, সিআইও ও এইচআর ম্যানেজারদেরও এআই-দক্ষ করে তোলার উদ্যোগ চলছে।
কর্মসংস্থান বিশেষজ্ঞ কাইল হলম মনে করেন, এআইয়ের উত্থান আগের প্রযুক্তি পরিবর্তনের মতো নয়; এখন কোম্পানিগুলো ছোট দল নিয়েই বড় কাজ সারতে চাইছে। তবে অভিজ্ঞ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ডেভিড বারাজাসের মতে, “এআই সরাসরি ইঞ্জিনিয়ারকে প্রতিস্থাপন করবে না, কিন্তু এআই ব্যবহারকারী ইঞ্জিনিয়ার অবশ্যই অন্যদের প্রতিস্থাপন করতে পারে।”
এমজে
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ১১ কোম্পানিতে
- কোম্পানি পুরোদমে উৎপাদনে, তারপরও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- মার্জারের সাফল্যে উজ্জ্বল ফার কেমিক্যাল
- তালিকাভুক্ত কোম্পানির ১৫ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর প্রথম ‘নো ডিভিডেন্ড’
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত
- তদন্তের খবরে থামছে দুই কোম্পানির ঘোড়দৌড়
- ডেনিম উৎপাদন বাড়াতে এভিন্স টেক্সটাইলসের বড় পরিকল্পনা
- শেয়ারবাজারে রেকর্ড: বছরের সর্বোচ্চ দামে ১৭ কোম্পানি
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার
- ব্যাখ্যা শুনতে ডাকা হচ্ছে শেয়ারবাজারের পাঁচ ব্যাংককে
- ব্যাংকিং খাতে এমডিদের পদত্যাগের ঢেউ: সুশাসনের সংকট স্পষ্ট