নির্বাচন ঘিরে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে দেশের সকল সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তথ্যপ্রযুক্তির সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সভায় প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, “সরকার সব ধরনের নাগরিক সেবাকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে অনেক সেবা দেশে ও বিদেশে অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। এসব সেবাকে সুরক্ষিত ও নির্বিঘ্ন রাখতে হলে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি।”

প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন, নাগরিক সেবার ক্ষেত্রগুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, “সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার হালনাগাদ করতে হবে। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত জনবলকেও আরও দক্ষ করে তোলা প্রয়োজন।”

সভায় তিনি একটি রেটিং পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট জনবলকে মূল্যায়নের প্রস্তাব দেন, যাতে সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নির্ধারণ সহজ হয়। ফিনান্সিয়াল সেক্টরে কোনো অপরাধকে ছাড়পত্র না দেওয়ার জন্যও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে বিচার বিভাগের পাশাপাশি কার্যকর ভূমিকা পালনের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, ইতোমধ্যে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আরও কিছু প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনের সময় গুজব, মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশনসহ অন্যান্য সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি ও বিটিআরসির মধ্যে সমন্বয় জোরদার করতে হবে।

সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুর ব্যাংকিং সেক্টরের সাইবার নিরাপত্তা আরও দৃঢ় করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং আরও কিছু কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান। তিনি সেক্টরাল সার্ট (সিইআরটি) গঠনের উদ্দোগের প্রশংসা করেন।

জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিলের সদস্য সচিব ও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালক ড. মো. তৈয়বুর রহমান প্রেজেন্টেশনে এজেন্সির কার্যক্রম, ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা এবং ‘সাইবার ইনসিডেন্ট রিপোর্টিং এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ সম্পর্কিত বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

২১ মে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়নের পর, এই সংশোধিত অধ্যাদেশের অধীনে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত ২৬ আগস্ট জাতীয় সাইবার সুরক্ষা কাউন্সিল গঠিত হয়। ২৫ সদস্যের এই কাউন্সিলের নেতৃত্বে রয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

ইএইচপি