ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২
বায়ুদূষণে বাংলাদেশিদের আয়ু কমছে সাড়ে পাঁচ বছর
বাংলাদেশে বায়ুদূষণের মাত্রা এমন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এটি এখন মানুষের গড় আয়ু থেকে বছরে বছরে কেড়ে নিচ্ছে সাড়ে পাঁচ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট প্রকাশিত ২০২৫ সালের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স একিউআই অনুযায়ী, বায়ুদূষণ বাংলাদেশের মানুষের জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ১৬ কোটি ৬৮ লাখ মানুষই এমন এলাকায় বসবাস করছে, যেখানে বাতাসের মান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নির্ধারিত মানদণ্ডের তুলনায় অনেক বেশি দূষিত। এমনকি দেশের সবচেয়ে কম দূষিত জেলা লালমনিরহাটেও বায়ুদূষণের মাত্রা (ডব্লিএইচও) মানের চেয়ে প্রায় সাত গুণ বেশি।
গত ২৫ বছরে, অর্থাৎ ১৯৯৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত, দেশের বাতাসে সূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম ২.৫) এর ঘনত্ব বেড়েছে ৬৬ শতাংশেরও বেশি। এর ফলে গড় আয়ু থেকে নতুন করে আরও ২ দশমিক ৪ বছর হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে, ধূমপান গড় আয়ু কমায় ২ বছর এবং অপুষ্টি ও অনিরাপদ পানির মতো অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি গড় আয়ু কমায় ১ থেকে দেড় বছর। কিন্তু বায়ুদূষণের নেতিবাচক প্রভাব তার চেয়েও বেশি গভীর ও স্থায়ী।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের মতো ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল। ঢাকায় যদি বায়ুর মান WHO-এর নির্ধারিত মাত্রায় আনা যায়, তবে ঢাকাবাসীর গড় আয়ু প্রায় ৬ দশমিক ৯ বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে। এমনকি দেশের নিজস্ব মানদণ্ড (৩৫ µg/m³) পূরণ করলেও গড় আয়ু বাড়তে পারে অন্তত ৪ বছর।
ঢাকার আশপাশে অবৈধ ও দূষণকারি ইটভাটা, পুরোনো বাস-ট্রাকের কালো ধোঁয়া, শিল্পকারখানার বর্জ্য নির্গমন এবং যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবকে দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা মৌসুমি ধোঁয়াশা। তবে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর আঞ্চলিক সহযোগিতা এখনো গড়ে ওঠেনি।
পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল ও সম্পদের ঘাটতি, প্রয়োগক্ষমতার সীমাবদ্ধতা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবের কারণে বায়ু নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রণীত আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে বাংলাদেশে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এর প্রভাব শুধু স্বাস্থ্য নয়, অর্থনীতি, শিক্ষা ও সামগ্রিক জীবনমানেও পড়বে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় পর্যায়ে শক্তিশালী আইন প্রয়োগের পাশাপাশি, আঞ্চলিক সহযোগিতা, গবেষণাভিত্তিক নীতি গ্রহণ এবং জনসচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- নতুন মার্জিন নীতিতে কারা সুবিধা পাবেন, কারা হারাবেন?
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: কবে, কখন, কোথায়-যেভবে দেখবেন সরাসরি(LIVE)
- শেয়ারবাজারই হতে পারে ওষুধ শিল্পের নতুন প্রাণশক্তি: ডিএসই চেয়ারম্যান
- শেয়ারবাজারে নতুন মার্জিন বিধিমালা জারি করল বিএসইসি
- নিউজিল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি দেখুন(LIVE)
- বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের ৬ কোম্পানির শেয়ারে ঝলক
- পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্তা
- ‘নো ডিভিডেন্ড’- এর বদনাম ঘুচাল বস্ত্র খাতের তিন কোম্পানি
- পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা কী পাবেন? জানালেন গভর্নর
- শিক্ষাবৃত্তি: প্রতি মাসে পাবে ৩ হাজার টাকা, আবেদন করবেন যেভাবে
- সাপোর্টের রেকর্ড মুনাফা, ১৫ বছরে সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড
- পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার শূন্য ঘোষণা নিয়ে যা জানালেন অর্থ উপদেষ্টা
- চলতি সপ্তাহে আসছে ৯ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- চলতি সপ্তাহে আসছে ৪৪ কোম্পানির ইপিএস
- ব্রাজিল বনাম হন্ডুরাস: ৭ গোলে শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল