ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

হ্যাটট্রিক করে আলোচনায় সৌরভী প্রীতি

ডুয়া নিউজ- খেলাধুলা
২০২৫ আগস্ট ২৮ ১৯:১৭:৪০
হ্যাটট্রিক করে আলোচনায় সৌরভী প্রীতি

একসময় গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে খেলতে ফুটবল ও জার্সি চেয়ে পরিবারের কাছে বায়না ধরতেন। নিজেদের মাঠ না থাকায় ১২ কিলোমিটার দূরের মাঠে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন করতেন। সেই ময়মনসিংহের নান্দাইলের মেয়ে সৌরভী আকন্দ প্রীতি এখন সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের জন্য আলো ছড়াচ্ছেন।

বুধবার (২৭ আগস্ট) নেপালের বিপক্ষে তার দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে বাংলাদেশ ৪-১ গোলের বড় জয় পেয়েছে। এই জয়ের মাধ্যমে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন জিইয়ে রেখেছে মেয়েরা। প্রীতির তিন গোলের সুবাদে টুর্নামেন্টে তার মোট গোল সংখ্যা এখন ৫, যা তাকে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ভারতের এক খেলোয়াড়ের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে রেখেছে।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বারঘরিয়া গ্রামের আবুল কালাম আকন্দ ও মনোয়ারা আক্তারের ছোট মেয়ে সৌরভী বর্তমানে নান্দাইল পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। দেশের বাইরে তার এই ধারাবাহিক সাফল্য শুধু নিজ গ্রামেই নয়, পুরো নান্দাইলের মানুষের কাছে তাকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে।

সৌরভী প্রথমবার সবার নজরে আসেন যখন তিনি উত্তর জাহাঙ্গীরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হয়ে বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নেন। এরপর নান্দাইলের পাঁচরুখি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তার নেতৃত্বে দল উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়, এবং পরে জাতীয় পর্যায়েও শিরোপা জিতে নেয়। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপে ডাবল হ্যাটট্রিকসহ ৯ গোল এবং ২০২৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ৭ গোল করে তিনি সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন, এবং ওই চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। এখন পর্যন্ত ভুটানের থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামের প্রতি ম্যাচেই তিনি গোল পেয়েছেন এবং দুবার 'মোস্ট ভেলুয়েবল প্লেয়ার' হয়েছেন।

সৌরভীর বাবা আবুল কালাম আকন্দ জানান, ফুটবল খেলার জন্য মেয়েকে অনেক কটুকথা শুনতে হয়েছে, কিন্তু সে দমে যায়নি। পড়ালেখার চেয়ে খেলাধুলার প্রতিই তার আগ্রহ ছিল বেশি। শুধু ফুটবল নয়, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার এবং বাঁশ দিয়ে বানানো স্টিক দিয়ে হকিও খেলতেন তিনি।

স্থানীয় সোহাগ আকন্দ বলেন, এখন তাদের গ্রামকে সবাই 'ফুটবলার প্রীতির বাড়ি' বলে চেনে। যখনই প্রীতির খেলা থাকে, সবাই টিভির সামনে বসে পড়ে এবং তার পায়ে বল গেলে হইহুল্লোড় শুরু হয়।

দেশের মানুষ এবং প্রীতির নিজ এলাকার মানুষ এখন অধীর আগ্রহে ভুটান ও ভারতের বিপক্ষে তার পরবর্তী ম্যাচগুলোর জন্য অপেক্ষা করছে। তারা আশা করছেন, প্রীতি আবারো ভালো কিছু করে দেখাবেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত