ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

'মৃত' ৭ ভোটারের সঙ্গে চায়ের আসরে রাহুল গান্ধী

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ আগস্ট ১৪ ১৫:৩১:৩৯
'মৃত' ৭ ভোটারের সঙ্গে চায়ের আসরে রাহুল গান্ধী

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে 'ভোট চুরি'র অভিযোগ তোলার পর এবার এক অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বিহারের ভোটার তালিকা থেকে 'মৃত' হিসেবে বাদ পড়া সাতজন ভোটারের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে নিজের বাসভবনে চায়ের আসরে মিলিত হলেন তিনি। এই সাক্ষাতের ভিডিও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, যা নিয়ে ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন বিহারের রাঘোপুর বিধানসভা কেন্দ্রের সাতজন ভোটার জানতে পারেন যে, নির্বাচন কমিশনের তালিকায় তাদের 'মৃত' দেখিয়ে নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। এই ভোটাররা বিহারের সাবেক উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা।

প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, রাহুল গান্ধী চারজন নারী ও তিনজন পুরুষ ভোটারকে তার বাসভবনে স্বাগত জানাচ্ছেন। আলোচনার শুরুতে তিনি সহানুভূতির সঙ্গে প্রশ্ন করেন, "শুনলাম আপনারা আর বেঁচে নেই?" জবাবে একজন ভুক্তভোগী বলেন, "আমাদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে।"

কীভাবে তারা বিষয়টি জানতে পারলেন, রাহুলের এই প্রশ্নের উত্তরে একজন জানান যে, ভোটার তালিকা পরীক্ষা করতে গিয়ে তারা এই চাঞ্চল্যকর তথ্য দেখতে পান। তাদের অভিযোগ, একটি পঞ্চায়েত এলাকাতেই প্রায় ৫০ জন ভোটারের নাম একইভাবে বাতিল করা হয়েছে। একজন নারী জানান, কমিশনের কর্মীরা তার বাড়ি থেকে আধার কার্ড ও ব্যাংকের পাসবইয়ের ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে যাওয়ার পরও তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

আলোচনাকালে ওই ভোটাররা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদবকে নির্বাচনে হারানোর ষড়যন্ত্র হিসেবেই পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করা হচ্ছে। একজন ভুক্তভোগী বলেন, "মহাজোট মিলে বিহারকে বাঁচাক।"

এর জবাবে রাহুল গান্ধী তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, "আরজেডি ও আমাদের দল মিলে এটা বন্ধ করার চেষ্টা করছি... বন্ধ করে দেব। ভোট চুরি হতে দেব না।"

পরে এই ভিডিওটি নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে পোস্ট করে রাহুল গান্ধী নির্বাচন কমিশনকে কটাক্ষ করে লেখেন, "জীবনে কখনো মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে চা খাওয়ার সুযোগ হয়নি। এই অনুভবের জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।"

উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট রাহুল গান্ধী এক সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘ভোট চুরি’-র গুরুতর অভিযোগ আনেন এবং বিরোধী সাংসদদের নিয়ে কমিশন অভিমুখে মিছিল করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশন রাহুলের কাছে তার অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ চেয়েছে এবং অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। কর্ণাটকের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকও এই বিষয়ে তদন্তের জন্য রাহুলের কাছ থেকে তথ্য চেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে 'মৃত' ভোটারদের সঙ্গে রাহুলের সাক্ষাৎ 'ভোট চুরি'র বিতর্ককে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত