ঢাকা, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ সম্পর্কের বরফ গললো বাণিজ্য চুক্তিতে

ডুয়া নিউজ- আন্তর্জাতিক
২০২৫ জুলাই ২৮ ১৩:৫২:৪৯
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ সম্পর্কের বরফ গললো বাণিজ্য চুক্তিতে

বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি—যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)—শেষ পর্যন্ত একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছেছে, যা দীর্ঘ এক মাস ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান ঘটাল। স্কটল্যান্ডে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লেয়েনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সমঝোতায় উপনীত হন দুই নেতা।

চুক্তি অনুযায়ী, ইইউ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হবে। এর আগে ট্রাম্প ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন।

ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর শূন্য শতাংশ শুল্ক রেখে ইউরোপকে মার্কিন রপ্তানিকারকদের জন্য বাজার উন্মুক্ত করতে হবে।

চুক্তির ফলে ইইউ আগামী তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করবে—এর মধ্যে ৬০০ বিলিয়ন সামরিক উপকরণে এবং সাড়ে ৭০০ বিলিয়ন জ্বালানি খাতে ব্যয় করবে।

ভন দের লেয়েন এই চুক্তিকে "স্থিতিশীলতার ভিত্তি" হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এটি ইউরোপকে রাশিয়ার জ্বালানি নির্ভরতা থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করবে।

তবে কিছু নির্দিষ্ট কৃষিপণ্য, রাসায়নিক দ্রব্য ও এয়ারক্রাফট পার্টসের ওপর শুল্ক মওকুফ থাকছে। স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখা হবে বলে ট্রাম্প জানিয়েছেন।

ট্রাম্পকে “কঠিন কিন্তু দক্ষ আলোচক” উল্লেখ করে ভন দের লেয়েন বলেন, “তিনি একজন প্রকৃত চুক্তিকারী।”

চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার শুল্ক আদায় করতে পারবে, পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ পাবে। ট্রাম্পের দাবি, এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তিগুলোর একটি।

২০১৪ সালে ইইউ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৯৭৬ বিলিয়ন ডলার। তবে ইউরোপ থেকে আমদানি বেশি হওয়ায় ট্রাম্প এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য "ক্ষতিকর সম্পর্ক" বলে উল্লেখ করেছিলেন।

ইইউ পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে আমেরিকান পণ্যে শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে এই চুক্তি সেই সংঘাত এড়াতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইউরোপের অন্যান্য নেতারা চুক্তিকে সতর্কভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। আইরিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বাণিজ্য ব্যয়বহুল ও জটিল হতে পারে। জার্মানির চ্যান্সেলর এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “স্থিতিশীল ও অনুমেয় বাণিজ্য সম্পর্ক সকলের জন্য সুবিধাজনক।”

ইতালির প্রধানমন্ত্রী চুক্তিকে স্বাগত জানালেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।

ট্রাম্প বর্তমানে স্কটল্যান্ড সফরে রয়েছেন, যেখানে তিনি তার পারিবারিক গলফ কোর্সের নতুন শাখা উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ইতিহাস

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ইতিহাস

বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমাণ প্রথমবারের মতো ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। রোববার (২৭ জুলাই) প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রতিবেদনে বলা... বিস্তারিত