ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকারি চাকরি আইনের দ্বিতীয় সংশোধনী অধ্যাদেশ জারি

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ২৪ ০০:১৯:৪৩
সরকারি চাকরি আইনের দ্বিতীয় সংশোধনী অধ্যাদেশ জারি

বহুল আলোচিত সরকারি চাকরি আইন দ্বিতীয় সংশোধনী অধ্যাদেশ অবশেষে সরকার কর্তৃক জারি করা হয়েছে। বুধবার (২৩ জুলাই) এই অধ্যাদেশটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের প্রস্তাবকে অধ্যাদেশ আকারে জারির সম্মতি দিলে এর প্রতিবাদে ২৪ মে থেকে সচিবালয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের এই আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে সরকার প্রথম অধ্যাদেশটি জারি করে।

সংশোধিত প্রথম অধ্যাদেশে পুরোনো আইনের সঙ্গে ‘৩৭ক’ নামে একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছিল। এই ধারায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়ী হলে সাত দিনের নোটিশ প্রদানের পর তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়। অনুমোদনের আগে অধ্যাদেশে ‘আচরণ বা দণ্ড সংক্রান্ত’ বিশেষ বিধানে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল:

১. যদি কোনো কর্মচারী এমন কাজ করেন যা অনানুগত্যের শামিল এবং যা অন্য কর্মচারীদের মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করতে পারে, শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করতে পারে, বা অন্যের কর্তব্য পালনে বাধা দিতে পারে।

২. এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে ছুটি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে, কাউকে কর্মবিরতিতে বাধ্য বা উসকানি দিলে, অথবা অন্য কর্মচারীকে কাজে বাধা দিলে।

৩. কোনো কর্মচারীকে তার কর্মস্থলে আসতে বা কাজ করতে বাধা দিলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।

আলোচ্য অধ্যাদেশটিতে অপরাধের শাস্তি হিসেবে পদাবনতি বা গ্রেড অবনতি, চাকরি থেকে অপসারণ, কিংবা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছিল। এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযোগ গঠন, ৭ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপযুক্ত জবাব না দিলে পুনরায় সাত দিনের নোটিশ প্রদানের পর তা বিবেচনা করে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর আপিল করার সুযোগও রাখা হয়েছিল; দণ্ডের নোটিশ হাতে পাওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করার সুযোগ ছিল।

প্রথম অধ্যাদেশটিকে তখন ‘কালো আইন’ আখ্যা দিয়ে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এটি বাতিলের দাবিতে তীব্র আন্দোলন শুরু করেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে গত ৪ জুন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটি আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে অধ্যাদেশটি সংশোধনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আন্দোলনকারীদের আপত্তিগুলো আমলে নিয়ে গত ৩ জুলাই উপদেষ্টা পরিষদের ৩২তম বৈঠকে এই সংশোধিত সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়, যা বুধবার (২৩ জুলাই) গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত