ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

হতাশার মাঝে ঐতিহাসিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের উল্লাস

ডুয়া নিউজ- খেলাধুলা
২০২৫ জুলাই ১৭ ১৭:০২:৪৫
হতাশার মাঝে ঐতিহাসিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের উল্লাস

মিশ্র অনুভূতি আর ঐতিহাসিক এক ট্রফি নিয়ে শ্রীলঙ্কা সফর শেষে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ক্রিকেটাররা। এ সময় টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ট্রফি হাতে অধিনায়ক লিটন দাসকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখাচ্ছিল। বিমানবন্দরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে হেড কোচ ফিল সিমন্সসহ দলের সব সদস্যকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

মাসব্যাপী এই সফরে বাংলাদেশ তিনটি ভিন্ন ফরম্যাটে মোট আটটি ম্যাচ খেলেছে। টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে টাইগারদের পারফরম্যান্স হতাশাজনক থাকলেও, টি-টোয়েন্টিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়েছে লিটন দাসের দল। শ্রীলঙ্কার মাটিতে এটিই বাংলাদেশের প্রথম কোনো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়।

সিরিজের বিস্তারিত ফলাফল:

টেস্ট সিরিজ: দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটি ড্র হলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে ইনিংস ও ৭৮ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যায় বাংলাদেশ। ফলে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নেয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা।

ওয়ানডে সিরিজ: ওয়ানডে সিরিজেও ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডে ৭৭ রানে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ১৬ রানে জিতে সিরিজে সমতা আনে বাংলাদেশ। তবে শেষ ম্যাচে ৯৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরে ২-১ এ সিরিজ হাতছাড়া করে সফরকারীরা।

টি-টোয়েন্টি সিরিজ: হতাশার এই সফরে আশার আলো দেখিয়েছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে হারলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। লিটন দাসের অনবদ্য ৭৬ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ ৮৩ রানের বিশাল জয় পায় এবং সিরিজে ১-১ সমতা ফেরায়। এরপর কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটের দাপুটে জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা।

উজ্জ্বল পারফর্মাররা:

এই সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তির তালিকায় নিঃসন্দেহে সবার উপরে থাকবে তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের নাম। দুর্দান্ত বোলিং করে ৩ ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বোলারদের র‍্যাংকিংয়ে ১২ ধাপ এগিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১৭তম স্থানে উঠে এসেছেন তিনি।

ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক লিটন দাস। পুরো সিরিজে ১১৪ রান করে তিনি সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন। ফর্মহীনতায় ভোগা লিটনের জন্য এই সিরিজ ছিল নিজেকে নতুন করে প্রমাণের মঞ্চ। তার পাশাপাশি তাওহিদ হৃদয় এবং শেষ ম্যাচে ৪৭ বলে ৭৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা তানজিদ হাসান তামিমও ব্যাটিংয়ে নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন। শেষ ম্যাচের নায়ক ছিলেন শেখ মেহেদি হাসান, যিনি মাত্র ১১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপ একাই ধসিয়ে দেন।

এই ঐতিহাসিক জয় নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশ দলকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাবে। তবে টেস্ট ও ওয়ানডের ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, এই দুই ফরম্যাটে এখনো উন্নতির অনেক জায়গা বাকি। দেশে ফিরেই বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না ক্রিকেটাররা, কারণ আগামী ২০ জুলাই থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত