ঢাকা, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গেজেট প্রকাশ

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ০৬ ২০:৩৮:৫১
শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গেজেট প্রকাশ

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৬০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা ছয়টি পৃথক মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

এই গেজেট ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের স্বাক্ষরে গত ৩ জুলাই বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় (বিজিপ্রেস) থেকে প্রকাশ করা হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, 'তফসিল বর্ণিত আসামিদেরকে জানানো যাচ্ছে যে, যেহেতু, তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রহিয়াছে। যেহেতু এই কোর্ট বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে যে, তারা গ্রেপ্তার ও বিচারে সোপর্দকরণ এড়াইবার জন্য আত্মগোপন করিয়াছেন এবং তাহাদের আশু গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা নাই।

সেহেতু ১৯৫৮ সনের ক্রিমিনাল 'ল' এমেন্ডমেন্ট এ্যাক্ট ৬(১৩) ধারা বিধান অনুসারে তফসিল বর্ণিত মামলায় তাহাদেরকে আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে এই কোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। অন্যথায় আপনাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্য সম্পন্ন করা হবে।'

এর আগে ১ জুলাই ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয়েছে ২০ জুলাই। বিষয়টি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) কে নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম।

তিনি বলেন, "প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলায় গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিজি প্রেস থেকে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই মামলা গুলোর তারিখ ধার্য হয়েছে। এ তারিখের মধ্যে আসামিরা আদালতে হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।"

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিক, পুতুল ও আজমিনা সিদ্দিকসহ মোট ১০০ জনকে আসামি করে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয় ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে।

মামলাগুলো দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন।

১৪ জানুয়ারি দায়ের করা একটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৮ জনকে আসামি করেন উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। পরবর্তী তদন্তে আরও ৪ জন যুক্ত হওয়ায় চার্জশিটে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২। মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

একই দিনে সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তদন্তে আরও ২ জন যুক্ত হওয়ায় চার্জশিটে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭ জন।

১৩ জানুয়ারি উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন শেখ রেহানাকে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে তদন্তে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামির সংখ্যা হয় ১৭ জন। তদন্ত করেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।

একই দিনে আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করে সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮।

ওই দিনই সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে আসামির সংখ্যা হয় ১৮ জন।

অবশেষে ১২ জানুয়ারি সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে চার্জশিটে মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জন। মামলাটিতে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে ১৬ জনকে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত