ঢাকা, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

'রাজনীতিতে যোগ দিয়ে সাকিব-মাশরাফির মতো আমিও ভুল করেছি'

ডুয়া নিউজ- খেলাধুলা
২০২৫ জুলাই ০৪ ০৮:০৮:৩১
'রাজনীতিতে যোগ দিয়ে সাকিব-মাশরাফির মতো আমিও ভুল করেছি'

ক্রিকেট মাঠে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ক্রিকেটার সনাৎ জয়সুরিয়া। তারপর ক্রিকেট মাঠ ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। রাজনীতিতেও মোটামুটি কম্পন তুলেছিলেন। এরপর সংসদ সদস্য হন এবং উপমন্ত্রী হন। এখন রাজনীতির পথচলা নিয়ে গভীর অনুশোচনায় রয়েছেন।

মাতারার সাবেক এই সংসদ সদস্য এবং শ্রীলঙ্কার উপমন্ত্রী এখন দশ বছরের বেশি সময় ধরে রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। তার মতে, ক্রিকেট তারকাদের রাজনীতিতে আসা উচিত নয় এবং তিনি নিজেও ভুল করেছেন।

ক্রিকেট মাঠ থেকে রাজনীতির ময়দানে নেমে আসা জয়সুরিয়া অকপটে স্বীকার করেছেন, "সংসদ সদস্য হয়ে অবশ্যই আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বাজে কাজটা করেছি। আমি জীবনে আর এটা করব না।"

সনাৎ জয়সুরিয়ার এই মন্তব্য বাংলাদেশে ক্রিকেট তারকাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জয়সুরিয়া আরও বলেছেন, "ক্রিকেটের কথা যদি বলেন, খেলোয়াড় এবং কোচ দুই ভূমিকাতেই অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। তবে আমি দীর্ঘ সময় ধরে ক্রিকেট খেললেও আগে কখনো কোচ হইনি। কাজেই এটাই বেশি চ্যালেঞ্জিং।"

সনাৎ জয়সুরিয়ার এই মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন তারকা ক্রিকেটারের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে নড়াইল-২ আসন থেকে টানা দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

একইভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হন। এখন ডিবি পুলিশ কর্তৃক আটক কারাবন্দী।

এছাড়া, বর্তমান সময়ের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন। দেশে তার বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজি মামলাসহ বহু মামলা চলমান।

সাকিব ও মাশরাফিদের রাজনীতিতে জড়ানো প্রসঙ্গে লঙ্কান তারকা জয়সুরিয়া স্পষ্ট ভাষায় তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, "রাজনীতি করা আসলে ক্রিকেটারদের কাজ নয়। কে কী বলবে জানি না। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, রাজনীতিতে যোগ দিয়ে আমি ভুল করেছিলাম। খেলা সবাই ভালোবাসে। পুরো জাতি আপনাকে ভালোবাসবে। রাজনীতি করলে সেটা ভাগ হয়ে যাবে। কাজেই ক্রিকেটারদের ক্রিকেটই উপভোগ করা উচিত, সেটা যেভাবেই হোক।"

জয়সুরিয়ার এই মন্তব্য ক্রিকেট এবং রাজনীতির মধ্যে বিভাজন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরেছে। একজন খেলোয়াড়ের জনপ্রিয়তা কি তাকে সফল রাজনীতিবিদ হতে সাহায্য করে, নাকি তা তার ক্যারিয়ারের জন্য একটি ভুল সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়ায়? সাকিব, মাশরাফি বা দুর্জয়ের বর্তমান পরিস্থিতি অন্তত জয়সুরিয়ার বক্তব্যকে আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে। পাশাপাশি অন্যান্য ক্রিকেটার বা খেলোয়াড়দেরও এই ভাবনা অনুরণিত করতে শুরু করেছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত