ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২
বাংলাদেশ এড়িয়ে সেভেন সিস্টার্সকে নিয়ে নতুন প্রকল্প ভারতের
ডুয়া ডেস্ক: বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এক ধরনের শীতলতা দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দুই দেশের মধ্যকার সংযোগ প্রকল্পগুলোতেও। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, যা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত তা এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড হয়ে যাতায়াতের সুযোগ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ায় ভারত নতুন বিকল্প পথ খুঁজছে।
নতুন রুট: শিলং-শিলচর মহাসড়ক
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ভারত এখন নতুন একটি চার লেনবিশিষ্ট মহাসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যা মেঘালয়ের শিলং থেকে আসামের শিলচর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। মোট ১৬৬.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কটি এনএইচ-৬ বরাবর নির্মিত হবে এবং এটি হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম উচ্চগতির করিডর প্রকল্প।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড (NHIDCL)। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ নয়, এবার লক্ষ্য মিয়ানমার হয়ে সংযোগ
ভারতের 'অ্যাক্ট ইস্ট' নীতির অংশ হিসেবে এবার দেশটি মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে বিকল্প সমুদ্র ও স্থলপথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদারের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। এর একটি বড় উদাহরণ কালাদান মাল্টি-মডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কলকাতা বন্দর থেকে মিয়ানমারের সিত্তে বন্দর, সেখান থেকে কালাদান নদীপথে পালেতওয়া এবং পরবর্তীতে সড়কপথে মিজোরামের জোরিনপুই পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশকে এড়িয়ে বিকল্প রুট গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি হবে। বিশাখাপত্তনম বা কলকাতা থেকে মিয়ানমার হয়ে পণ্য পৌঁছাবে উত্তর-পূর্ব ভারতে। এরপর শিলং-শিলচর মহাসড়ক দিয়ে তা বাকি রাজ্যগুলোতে পরিবহন সম্ভব হবে।
কৌশলগত গুরুত্ব ও সময় সাশ্রয়
এই মহাসড়কের মাধ্যমে ভ্রমণের সময় সাড়ে আট ঘণ্টা থেকে কমে পাঁচ ঘণ্টায় নেমে আসবে। এতে মিজোরাম, ত্রিপুরা, মণিপুর এবং আসামের বরাক উপত্যকার সঙ্গে সংযোগ আরও দৃঢ় হবে। ফলে এই করিডর উত্তর-পূর্ব ভারতের ‘গেটওয়ে’ হিসেবে গড়ে উঠবে।
শিলিগুড়ির ওপর নির্ভরতা কমবে
বর্তমানে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সংযোগের একমাত্র বড় পথ হলো শিলিগুড়ির চিকেন’স নেক করিডর। তবে এই নতুন মহাসড়ক চালু হলে শিলিগুড়ির ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমে যাবে।
চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প, তবে উচ্চ অগ্রাধিকার
প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূখণ্ডজনিত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চল হওয়ায় নির্মাণকাজ কঠিন। তবুও, এটি ভারত সরকারের জন্য একটি কৌশলগত অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প।
মহাসড়কে থাকবে:
-
১৯টি বড় সেতু
-
১৫৩টি ছোট সেতু
-
৩২৬টি কালভার্ট
-
২২টি আন্ডারপাস
-
২৬টি ওভারপাস
-
৮টি সাবওয়ে
-
৩৪টি ভায়াডাক্ট
বাংলাদেশভিত্তিক প্রকল্প স্থগিত
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখিয়ে ভারত কয়েকটি রেল সংযোগ প্রকল্প স্থগিত করেছে। অন্তত তিনটি চলমান প্রকল্প এবং আরও পাঁচটি জরিপ পর্যায়ের প্রকল্প থেমে গেছে। এদের বেশিরভাগই ছিল বাংলাদেশ হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন বিষয়ক।
এই স্থগিত প্রকল্পগুলোর মোট মূল্য প্রায় ৫ হাজার কোটি রুপি। এই প্রেক্ষাপটে ভারত এখন ভুটান ও নেপালের মধ্য দিয়ে বিকল্প সংযোগের সম্ভাবনাও বিবেচনা করছে, যার সম্ভাব্য বিনিয়োগ প্রায় ৩,৫০০ থেকে ৪,০০০ কোটি রুপি।
বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপট
২০২৪ সালে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হলেও বর্তমানে এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কিছুটা অনিশ্চিত।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনাল: কবে, কখন-যেভাবে দেখবেন লাইভ
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি(LIVE) দেখুন
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি ফ্রিতে সরাসরি(LIVE) দেখুন
- আজ বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় টি-টোয়েন্টি: যেভাবে দেখবেন লাইভ (LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৯৫ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- ডিএসই’র দুই ব্রোকারেজের ট্রেডিং লাইসেন্স বাতিল
- বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় টি-২০: কবে, কখন, কোথায়-যেভাবে দেখবেন খেলাটি
- পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখবেন যেভাবে
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ৬৮ কোম্পানি, দেখুন এক নজরে
- মার্জিন রুল থেকে মিউচুয়াল ফান্ড—সবখানেই আসছে বড় পরিবর্তন
- দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম পাকিস্তান, খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখুন
- বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩য় টি-টোয়েন্টি: খেলাটি সরাসরি(LIVE) দেখবেন যেভাবে
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক
- ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া: খেলাটি মোবাইলে সরাসরি দেখুন (LIVE)
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ