ঢাকা, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২
১২৪ আলোকবর্ষ দূরে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ, গবেষণায় উত্তেজনা

ডুয়া ডেস্ক : অবশেষে বহির্বিশ্বে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে মানবজাতির দীর্ঘ অনুসন্ধান আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। নাসার জ্যোতির্বিদেরা দাবি করেছেন, পৃথিবী থেকে প্রায় ১২৪ আলোকবর্ষ দূরের একটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে পাওয়া গেছে প্রাণের সম্ভাব্য রাসায়নিক চিহ্ন। গ্রহটির নাম কে২-১৮বি, যেখানে বিশাল সমুদ্র এবং অণুজীবের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) ব্যবহার করে গবেষকেরা কে২-১৮বি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে ডাইমিথাইল সালফায়েড (DMS) ও ডাইমিথাইল ডিসালফায়েড শনাক্ত করেছেন। পৃথিবীতে এই দুটি উপাদান সাধারণত জীবিত প্রাণী, বিশেষ করে সামুদ্রিক ফাইটোপ্ল্যাংকটন থেকেই উৎপন্ন হয়।
গবেষণার নেতৃত্বে থাকা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিক্কু মধুসূদন বলেন, “আমরা এখন পর্যন্ত যা পেয়েছি, তা সম্ভবত জীবনের ইঙ্গিত—এটি হতে পারে এ পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ।”
তবে বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছেন না। তাঁরা সতর্ক করে বলেছেন, এই আবিষ্কারের জন্য যে পরিসংখ্যানগত নিশ্চয়তা (Five Sigma) প্রয়োজন, তা এখনো পাওয়া যায়নি। ফলে আরও পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন।
কে২-১৮বি একটি ‘হাইসিয়ান’ গ্রহ—যে ধরনের গ্রহে বিশাল পানি-মহাসাগর এবং হাইড্রোজেন-সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডল থাকতে পারে। এটি এমন এক কক্ষপথে ঘুরছে, যাকে ‘গোল্ডিলক্স জোন’ বলা হয়—যেখানে তরল পানির উপস্থিতি সম্ভব।
২০২৩ সালেই JWST এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে মিথেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড শনাক্ত করেছিল। এবার আরও একধাপ এগিয়ে DMS-এর উপস্থিতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
তবে এই আবিষ্কার নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেমন্ড হামবার্ট মনে করেন, গ্রহটি এতটাই উত্তপ্ত হতে পারে যে, সেখানে পানি নয়, বরং লাভার মহাসাগর থাকতে পারে। এমআইটি-র অধ্যাপক সারা সিগার বলেন, “এ ধরনের দাবি অতীতেও এসেছে, কিন্তু পরে ভুল প্রমাণিত হয়েছে।” তাঁর মতে, আমাদের সৌরজগতের মঙ্গল, শুক্র কিংবা শনির উপগ্রহ এনসেলাডাসেই প্রাণের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তবে মধুসূদন আশাবাদী। তাঁর ভাষায়, “আর মাত্র ১৬-২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করতে পারলেই আমরা নিশ্চিত হতে পারব। হয়তো খুব শিগগিরই আমরা জেনে যাব—এই মহাবিশ্বে আমরাই কি একমাত্র, নাকি অন্য কোথাও কেউ আছে।”
প্রসঙ্গত, এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ। তথ্যসূত্র: এএফপি, সায়েন্স অ্যালার্ট
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বদলে গেছে ধারণা, বিস্মিত ইসরায়েল
- শেয়ারবাজারের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানিকে বিএসইসির আল্টিমেটাম
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- ‘বিপর্যয় থেকে বিশ্ব মাত্র কয়েক মিনিট দূরে’
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- ঢাবিতে হটাৎ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, ককটেল বি-স্ফো-র-ণ
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- একাধিক মিসাইল ছুঁড়েছে উত্তর কোরিয়া
- দুর্বল ১৫ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির চিন্তাভাবনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাবিতে ক্লাস ছুটি কতদিন, যা জানা গেল
- লন্ডন ছাড়ছেন তারেক রহমান
- জেরুজালেম ও তেল আবিবে বড় বিস্ফোরণ, ট্রাম্পের জরুরি বৈঠক
- বিএসইসির তদন্তের জালে শেয়ারবাজারের ৫ ঋণগ্রস্ত কোম্পানি