ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২
শেয়ারবাজারের কোম্পানিসহ ঋণ পুনর্গঠনের দাবি ৬০ শিল্প-প্রতিষ্ঠানের

ডুয়া নিউজ: বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কমপক্ষে ৬০টি প্রতিষ্ঠান ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান দাবি করছে, তারা নিয়ন্ত্রণ-বহির্ভূত নানা বৈশ্বিক ও দেশীয় কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। আবেদনের আওতায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা থেকে শুরু করে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত এবং অধিকাংশ আবেদনেই ১৫ বছর মেয়াদি পুনর্গঠনের সুবিধা চাওয়া হয়েছে।
নীতিগত সহায়তার উদ্যোগচলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বাছাই কমিটি গঠন করেছে, যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আর্থিক সংকটে পড়া ঋণগ্রহীতাদের পুনর্গঠন সুবিধা দিয়ে কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা। কমিটি এসব প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি ব্যাংকের বকেয়া আদায় নিশ্চিত করতে নীতিগত সুপারিশ প্রদান করবে।
ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ইতোমধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থাপকদের নির্দেশনা দিয়েছে—বাহ্যিক পরিস্থিতির কারণে খেলাপিতে পরিণত হওয়া গ্রাহকদের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য প্রস্তাব দিতে। ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যেসব গ্রাহকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার বেশি, তারা এই সুবিধার আওতায় থাকবেন। পরে এ নীতিমালায় অ-খেলাপি, তবে আর্থিক সংকটে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
পুনর্গঠন দাবির বৈধ কারণঋণ পুনর্গঠনের জন্য যেসব কারণকে বৈধ হিসেবে ধরা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
* কোভিড-১৯ মহামারি
*রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
*বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা
*প্রাকৃতিক দুর্যোগ (যেমন: বন্যা)
*দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা
আবেদন পরিস্থিতি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ২৫ মার্চ পর্যন্ত ৩০টি ব্যাংক ৬০টি ক্লায়েন্টের পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন জমা দিয়েছে। অধিকাংশ আবেদন ব্যাংকের মাধ্যমেই জমা পড়লেও, কিছু আবেদন সরাসরি গভর্নর বা উপদেষ্টা কমিটির কাছে গিয়েছে।
বর্তমানে ১০টির বেশি আবেদন পর্যালোচনার আওতায় রয়েছে। উল্লেখযোগ্য আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছে:
*বেক্সিমকো ফার্মা: প্রতিষ্ঠানটির নামে সরাসরি খেলাপি না থাকলেও, গ্রুপভুক্ত অন্যান্য ইউনিটের আর্থিক চ্যালেঞ্জ থাকায় তারা আবেদন করেছে।
*জেএমআই গ্রুপ: প্রায় ২,০০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনর্গঠনের আবেদন করেছে।
*আব্দুল মোনেম লিমিটেড: ৮০০ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে, এবং ইতিমধ্যে ৪ শতাংশ পরিশোধ করায় ইতিবাচক বিবেচনায় রয়েছে।
*এনার্জিপ্যাক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড: অর্থনৈতিক অবস্থান দুর্বল, এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
আর্থিক চাপে আবেদনকারীরাঅনেক প্রতিষ্ঠানই ডলার বিনিময় হারের পরিবর্তনের কারণে অতিরিক্ত ব্যয়ে পড়েছে। যেমন, সরকারি প্রকল্পে পুরোনো রেটে চুক্তি করলেও ব্যাংকগুলো বর্তমানে বেশি রেটে অর্থ আদায় করছে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে।
আইনি জটিলতা ও সম্ভাব্য সমাধানকমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, কিছু প্রতিষ্ঠান রপ্তানি আয় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও, ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের সীমাবদ্ধতায় তাদের পুনর্গঠন সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
মূল্যায়নের ধারাকমিটির সদস্য ও অর্থনীতিবিদ মামুন রশিদ জানান, প্রতিটি আবেদন পৃথকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে। সিআইবি রিপোর্ট, কার্যকরী মূলধন ও ঋণের ইতিহাস বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আবেদন করেছে এবং যাদের অর্থনৈতিক গুরুত্ব আছে, তাদের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব নেওয়া হচ্ছে।”
নীতিমালার সম্প্রসারণ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সংশোধিত নির্দেশনা জারি করে, যাতে ৩০ সেপ্টেম্বরের পর খেলাপিতে পরিণত হওয়া বা আর্থিক সংকটে পড়া, তবে এখনো খেলাপি নয়—এমন প্রতিষ্ঠানও অন্তর্ভুক্ত হয়। তিনবার বা তার কম পুনঃতফসিল হওয়া ঋণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আবেদনের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ভারতে ঢাবির দুই ছাত্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়, ক্ষোভ
- শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্র ও বহুজাতিক ১৫ কোম্পানি
- ১১'শ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিবে ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন
- ডিএনসিসির শিক্ষাবৃত্তি পাবে ২ হাজার শিক্ষার্থী
- স্কয়ার ফার্মার বাজার মূলধনে নতুন মাইলফলক
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৭ প্রতিষ্ঠান
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৪ প্রতিষ্ঠান
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- বিকালে আসছে ১০ কোম্পানির ইপিএস
- বিকালে আসছে ২১ কোম্পানির ইপিএস
- ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- নতুন সিনেট সদস্য হলেন ঢাবির ৫ অধ্যাপক
- শিবলী রুবাইয়াত ও শেখ শামসুদ্দিন শেয়ারবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
- সর্বোচ্চ উচ্চতায় ১৭ কোম্পানির শেয়ার
- গেস্ট হাউজ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহ উদ্ধার