ঢাকা, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

‘বিদেশি ব্যবস্থাপনা ছাড়া আধুনিক চট্টগ্রাম বন্দর সম্ভব নয়’

২০২৫ নভেম্বর ০৮ ১৪:৫৬:৫৬

‘বিদেশি ব্যবস্থাপনা ছাড়া আধুনিক চট্টগ্রাম বন্দর সম্ভব নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে বন্দর খাতে আধুনিকায়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

শনিবার সকালে পাবনার নগরবাড়ি আধুনিক নদীবন্দর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কেউ কেউ ব্যক্তিস্বার্থে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ভেবে অভিযোগ তুলছেন যে, আমরা নাকি চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছি। আসলে বিষয়টি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। গার্মেন্টসসহ অনেক সেক্টরেই বিদেশি কোম্পানি কাজ করছে, সেখানেও তো দেশের ক্ষতি হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের বহু দেশে বন্দর বিদেশি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়, এবং তারা তাতে আরো লাভবান হয়। আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর এখনো আধুনিক মানে পৌঁছায়নি। তাই বন্দর উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বিদেশি ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।”

নগরবাড়ি নদীবন্দর নিয়ে ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “এই বন্দরের সুফল স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে এখানে কনটেইনার হ্যান্ডলিং সুবিধা চালু করা হবে। এছাড়া নদীপথে নাব্যতা বজায় রাখতে চারটি নতুন ড্রেজার আনা হয়েছে, যার একটি এখানেই ব্যবহৃত হবে। সব মিলিয়ে নগরবাড়িকে একটি মাঝারি মানের আধুনিক বন্দর হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।”

বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ার বেগমসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, সার, সিমেন্ট, কয়লাসহ ভারী পণ্য পরিবহনের জন্য নদীপথে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র নগরবাড়ি ঘাট। ২০১৮ সালে ঘাটটিকে আধুনিক নৌবন্দরে রূপান্তরের কাজ শুরু হয়, যদিও ভূমি অধিগ্রহণ ও মামলাজনিত জটিলতায় প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় দু’বার বাড়াতে হয়।

৩৬ একর জমির ওপর নির্মিত এই বন্দরে রয়েছে ৩৬০ মিটার কংক্রিট জেটি, টার্মিনাল, গুদামঘর, ওয়্যারহাউজ ও দ্রুত পণ্য ওঠানো-নামানোর আধুনিক সুবিধা। ক্রেন ও পাকা জেটি ব্যবহারের ফলে বন্দরের কার্যক্ষমতা বেড়েছে প্রায় দশগুণ আগে যেখানে প্রতিদিন দুই হাজার টন পণ্য খালাস হতো, এখন তা বেড়ে প্রায় ২০ হাজার টন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা বলছেন, “আগে সনাতন পদ্ধতিতে পণ্য ওঠানো-নামানোর কারণে কাজ ধীরগতিতে চলত। এখন সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজে করে পণ্য এনে এখান থেকে সড়কপথে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে সহজেই পৌঁছে দেওয়া যাবে। এতে সময় ও খরচ দুটিই কমবে।”

তাদের মতে, আধুনিক বন্দরের ফলে উত্তরাঞ্চলে আমদানি পণ্য পরিবহনে ট্রাকপ্রতি ৮-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ কমবে, এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম হবে আরো সহজ ও স্বচ্ছ।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত