ঢাকা, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২

বিক্রয় হ্রাসে বিএটিবিসি’র মুনাফা-ক্যাশ ফ্লোতে বড় ধাক্কা

মোবারক হোসেন
মোবারক হোসেন

রিপোর্টার

২০২৫ নভেম্বর ০১ ২০:৫২:১২

বিক্রয় হ্রাসে বিএটিবিসি’র মুনাফা-ক্যাশ ফ্লোতে বড় ধাক্কা

মোবারক হোসেন: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ২৩ শতাংশ মুনাফা হ্রাসের খবর প্রকাশ করেছে। মূলত বিক্রয় কমে যাওয়া এবং পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির কারণেই কোম্পানিটির মুনাফায় এই বড় পতন ঘটেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের একই সময়ের ৩৯৭ কোটি টাকা মুনাফার বিপরীতে জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সময়ে কোম্পানিটি ৩০৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। এরফলে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) পূর্ববর্তী বছরের ৭ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে কমে ৫ টাকা ৬৫পয়সায় দাঁড়িয়েছে।

কোম্পানিটি তাদের আয়ের নোটে জানিয়েছে, "বিক্রয়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, পাশাপাশি উচ্চ আবগারি শুল্ক এবং ঢাকা কারখানা বন্ধের কারণে অতিরিক্ত খরচ নীট মুনাফার প্রবৃদ্ধিতে আঘাত হেনেছে।"

তৃতীয় প্রান্তিকে সিগারেট প্রস্তুতকারক এই কোম্পানিটির মোট নীট বিক্রয় ১৮ শতাংশ কমেছে। গত বছরের একই সময়ের ২ হাজার ৫২ কোটি টাকার বিপরীতে এ বছর বিক্রয় হয়েছে ১ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা।

জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ের ৯-মাসের পারফরম্যান্সে আরও বড় পতন দেখা গেছে। এই সময়ের জন্য বিএটিবি-এর মুনাফা গত বছরের তুলনায় ৪৬ শতাংশ কমে ৭২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সামগ্রিক নীট বিক্রয় ১৭ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা হয়েছে।

অন্যদিকে, স্থানীয় বিক্রয় ২০ শতাংশ কমে ৫ হাজার ২৩১ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। তবে এর বিপরীতে, তামাক পাতা রপ্তানি ৭৮ শতাংশ বেড়ে ৩৭০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নীট পরিচালন ক্যাশ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) গত বছরের একই সময়ের পজিটিভ ২৬ টাকা ১৭ পয়সা থেকে কমে নেগেটিভ ২১ টাকা ৭০ পয়সা হয়েছে। বিক্রয় থেকে কম অর্থ সংগ্রহ এবং উচ্চ আবগারি শুল্ক পরিশোধের কারণেই ক্যাশ প্রবাহ নেতিবাচক হয়েছে।

বিএটিবি গত বছরের জুলাই মাসে আদালতের আদেশে তাদের ঢাকা কারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল এবং আশুলিয়ার একটি নতুন স্থানে কার্যক্রম স্থানান্তর করেছিল।

এই স্থানান্তরের ফলে ৯-মাসের এই সময়ে কোম্পানিটির ২১২ কোটি টাকা এককালীন ব্যয় হয়েছে, যা পরিচালন ব্যয়কে ১৫ শতাংশ বাড়িয়ে মোট ৬৫০ কোটি টাকায় নিয়ে গেছে। এছাড়াও, কোম্পানির অর্থায়ন ব্যয় ২১ শতাংশ এবং আবগারি শুল্ক ব্যয় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় নীট মুনাফার ওপর আরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

কম মুনাফার কারণে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নীট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) গত বছরের ১১৩.৮২ টাকা থেকে কমে ১০৫.২২ টাকা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ অর্থবছরে মুনাফা ২ শতাংশ কমলেও কোম্পানিটি ৩০০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছিল, যা ছিল বিগত তিন অর্থবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার দর ০.৩১ শতাংশ বেড়ে ২৫৪ টাকা ৯০ পয়সায় ক্লোজিং হয়েছে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত