ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২

তালিকাভুক্তির ১৫ বছরে সর্বোচ্চ বিক্রি ম্যারিকো বাংলাদেশের

২০২৫ অক্টোবর ২৯ ০০:২০:৩৬

তালিকাভুক্তির ১৫ বছরে সর্বোচ্চ বিক্রি ম্যারিকো বাংলাদেশের

মোবারক হোসেন: দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য কোম্পানি ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড তাদের চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) বিক্রয় বা বিক্রয় প্রবৃদ্ধিতে এক নতুন রেকর্ড গড়েছে। এই সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

কোম্পানিটির প্রকাশিত অর্ধবার্ষিক আর্থিক বিবরণী অনুসারে, তালিকাভুক্ত এই বহুজাতিক কোম্পানির বিক্রি এপ্রিল-সেপ্টেম্বর সময়কালে ১ হাজার ১২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৮৪০ কোটি টাকা।

এই প্রবৃদ্ধি গত ২০০৯-১০ অর্থবছরের পর মারিকোর সর্বোচ্চ, যখন তারা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। এর আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে, যা ছিল ১৪ শতাংশ।

উল্লেখ্য, মুম্বাই-ভিত্তিক তাদের মূল কোম্পানি ম্যারিকো লিমিটেড-এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মারিকো বাংলাদেশও এপ্রিল থেকে মার্চ পর্যন্ত তাদের অর্থবছর গণনা করে। মূল কোম্পানি ম্যারিকো লিমিটেড, মারিকো বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ শেয়ারের মালিক।

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বিক্রিতে এমন উল্লম্ফন সত্ত্বেও ম্যারিকো বাংলাদেশের নিট মুনাফার প্রবৃদ্ধি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। এপ্রিল-সেপ্টেম্বর সময়কালে নিট মুনাফা বছরে ৯ শতাংশ বেড়ে ৩৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানায়, "আমাদের এই বিক্রয় প্রবৃদ্ধি কার্যকর পণ্য সরবরাহ, শক্তিশালী ভোক্তা আস্থা এবং পণ্যের ধারাবাহিক বৈচিত্র্যায়নের ফলেই সম্ভব হয়েছে। তবে, মূল্যস্ফীতির কারণে ইনপুট কস্ট বা কাঁচামাল খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মুনাফাকে প্রভাবিত করেছে।"

মুনাফা নির্ধারণের অন্যতম প্রধান উপাদান 'বিক্রিত পণ্যের ব্যয়' বা কস্ট অফ গুডস সোল্ড গত অর্থবছরের প্রথমার্ধে টার্নওভারের ৩৯ শতাংশ ছিল, যা চলতি বছর বেড়ে ৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এটিই ইঙ্গিত দেয় যে, কাঁচামালের দাম বাড়ার কারণে মুনাফায় ধাক্কা লেগেছে। এছাড়াও, নিট অর্থায়ন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় মুনাফার ওপর আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) গত বছরের ১০১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে এবার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে।

জনপ্রিয় হেয়ার কেয়ার অয়েল ব্র্যান্ড প্যারাশুট-এর বিক্রেতা এই কোম্পানিটি তাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ছয় মাস সময়ের জন্য ৫০০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

তবে, ডিভিডেন্ড ঘোষণার দিনেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ম্যারিকো বাংলাদেশের শেয়ারের দাম প্রায় ১ শতাংশ কমে ২ হাজার ৭৭১ টাকায় লেনদেন শেষ করেছে। বর্তমানে ডিএসইতে রেকিট বেঙ্কিজার (বাংলাদেশ)-এর পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ-মূল্যবান শেয়ার।

ম্যারিকো বাংলাদেশ ২০০০ সালের জানুয়ারিতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে এবং ২০০২ সালে তাদের গাজীপুর উৎপাদন কেন্দ্রে উৎপাদন শুরু করে। পরে তারা ২০১২ এবং ২০১৭ সালে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সম্প্রতি কোম্পানিটি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি নতুন প্ল্যান্টে বিনিয়োগ করেছে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত