ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২

সিগারেট বিক্রি ও সেবন ইসলামে হারাম: শায়খ আহমাদুল্লাহ 

২০২৫ অক্টোবর ২১ ১৮:৫৭:০৩

সিগারেট বিক্রি ও সেবন ইসলামে হারাম: শায়খ আহমাদুল্লাহ 

মো. আবু তাহের নয়ন : বাংলাদেশের খ্যাতনামা ইসলামি চিন্তাবিদ ও আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ সম্প্রতি এক ওয়াজ মাহফিলে ধূমপানের বিষয়ে ইসলামের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসলামে যা খাওয়া, পান করা বা ব্যবহার করা হারাম—তা বিক্রিও হারাম। তাই কেউ যদি নিজে ধূমপান না করেও সিগারেট বা বিড়ি বিক্রি করেন, তাহলে তার সেই উপার্জন হারাম হিসেবে গণ্য হবে।

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, একটি দোকানে যদি বৈধ পণ্যের পাশাপাশি অবৈধ (হারাম) পণ্যও বিক্রি হয়, তবে শুধু হারাম পণ্যের আয়টাই হারাম হিসেবে বিবেচিত হবে। হালাল পণ্যের আয়ে কোনো সমস্যা নেই।

দোকান চালাতে গিয়ে সিগারেট বিক্রি করা বাধ্যতামূলক দাবি সম্পর্কে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, "এটাই তো আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পরীক্ষা। আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যদি হারাম উপার্জন পরিত্যাগ করেন, তবে জান্নাতের আশায় থাকা যায়।" তিনি বলেন, হারাম উপার্জনে বরকত থাকে না। আয় কম হলেও হালাল ও বরকতময় হলে তা দিয়েই প্রকৃত শান্তি লাভ সম্ভব।

তিনি ধূমপানের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েও সতর্ক করেন। বলেন, দেশে ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যার অন্যতম কারণ ধূমপান। একাধিক পরিবার ধ্বংস হচ্ছে, সন্তানরা অসহায় হয়ে পড়ছে। তাই দোকানদারদের তিনি আহ্বান জানান— সাহস করে সিগারেট ও বিড়ি বিক্রি বন্ধ করুন। এতে দুনিয়ার যেমন কল্যাণ, তেমনি আখিরাতে আল্লাহর সন্তুষ্টিও মিলবে।

তবে সমাজ বিশ্লেষকরা মনে করেন সরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি সবার আগে সামাজিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে এগিয়ে আসতে হবে। ধূমপানের কুফল সম্পর্কে অবহিত করতে এবং ধুমপান বিষয়ে জনসাধারণকেনিরুৎসাহিত করতে দেশের বিভিন্ন সামাজিক ও আন্তর্জাতিক সংগঠনসহ সেবামূলক দাতা সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ।

সাম্প্রতিক সময়ে ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে অধূমপায়ী ফোরাম নামের একটি সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে সারা দেশে। ‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, ধূমপান মুক্ত হোক প্রিয় বাংলাদেশ’—এই স্লোগান নিয়ে সংগঠনটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাট-বাজার, বাসস্ট্যান্ড, জনবহুল এলাকায় নিয়মিত ধূমপান বিরোধী র‌্যালি, আলোচনা সভা ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করছে।

সংগঠনটির সভাপতি মো. হানিফ খানের নেতৃত্বে (অফ) ইতোমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় সচেতনতা কার্যক্রম চালু করেছে। তারা বিশ্বাস করে, ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে হলে শুধু ধর্মীয় বক্তব্য নয়, সরকারি পরিকল্পনার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলনও জরুরি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে ধূমপান থেকে দূরে রাখতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়মিত ক্যাম্পেইন চালানো দরকার।

(অফ)-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা শুধু ধূমপানের ক্ষতিকর দিক নিয়েই কথা বলে না, বরং ধূমপানমুক্ত জীবনযাপনের উপকারিতা, স্বাস্থ্য সচেতনতা ও মানসিকভাবে ধূমপান ছাড়ার উপায় নিয়েও কাজ করে। সংগঠনটি নানা প্রচার সামগ্রী, পোস্টার, লিফলেট ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত প্রচারণা চালায়।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত