ঢাকা, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

রেকর্ড ভাঙ্গার দিনে লাল কার্ড দুই কোম্পানির!

২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১৮:৪৫:০৪

রেকর্ড ভাঙ্গার দিনে লাল কার্ড দুই কোম্পানির!

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে আজ যখন সূচকের ব্যাপক পতন হচ্ছে, ঠিক তখনই "নো ডিভিডেন্ড" ঘোষণার কারণে চরম মূল্যহানির শিকার হলো দুটি ঐতিহ্যবাহী কোম্পানি—লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স এবং এপেক্স ট্যানারি। এই দুটি কোম্পানির শেয়ারদর এতটাই কমেছে যে আজ ডিএসইতে পতনের শীর্ষ তালিকায় তারাই যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। একসময় নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেওয়া এই কোম্পানিগুলোর এমন অপ্রত্যাশিত ঘোষণা বিনিয়োগকারীদের জন্য ছিল এক বড় ধাক্কা।

লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ অর্থবছরের জন্য নো ডিভিডেন্ড ঘোষণার ফলস্বরূপ কোম্পানিটির শেয়ারদর এক দিনেই ১২.৭৩ শতাংশ শতাংশ কমে গেছে। শেয়ারটি ১৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে নেমে ১৪ টাকা ৪০ পয়সায় স্থির হয়েছে। অন্যদিকে, এপেক্স ট্যানারি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২৫ অর্থবছরের জন্য নো ডিভিডেন্ড ঘোষণার কারণে দর কমেছে ১২.০১ শতাংশ শতাংশ; শেয়ারটি ৬৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে কমে ৬০ টাকা ১০ পয়সায় নেমে এসেছে। এই দুই কোম্পানির পতনের এমন বিপর্যয় চিত্র আগে কখনো দেখা যায়নি।

তালিকাভুক্তির পর থেকে বিনিয়োগকারীরা এই কোম্পানিগুলো থেকে নিয়মিত ডিভিডেন্ডের প্রত্যাশা করে আসছিলেন। সেই ঐতিহ্যে ছেদ ঘটায় তাদের আস্থায় বড় ধরনের চিড় ধরেছে। এই বিপুল দরপতন স্পষ্টতই বাজারে এই দুই কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারানোর ইঙ্গিত দেয়। শেয়ারের মূল্যে এত বড় পরিবর্তন আসার প্রধান কারণ হলো, বাজার এই কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

তবে, এই চরম নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্যেও বিশ্লেষকরা ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখছেন। তারা মনে করেন, নো ডিভিডেন্ড সিদ্ধান্তটি কোম্পানি দুটির আর্থিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করার কৌশল হিসেবে দেখা যেতে পারে, যেখানে মুনাফার পুরো অংশটি সংরক্ষিত থাকে। এই সংরক্ষিত মূলধন ভবিষ্যতে ব্যবসায়িক সক্ষমতা বাড়াতে এবং যেকোনো আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে।

এছাড়াও, এই ব্যাপক দরপতনকে অনেকে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন। লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের ৫২ সপ্তাহের সর্বনিম্ন দর ১৩ টাকা ৬০ পয়সা এবং এপেক্স ট্যানারির দরও ৫২ সপ্তাহের নিম্নসীমার খুব কাছাকাছি চলে আসায়, এই পতন আকর্ষণীয় ক্রয় পথ তৈরি করেছে। যেসব বিনিয়োগকারী কোম্পানির মৌলিক কাঠামো এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধিতে বিশ্বাসী, তারা এই কম দামে শেয়ার সংগ্রহ করে ভবিষ্যতে লাভবান হওয়ার সুযোগ খুঁজছেন।

পরিশেষে বলা যায়, এই দুই কোম্পানির নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা শেয়ারবাজারে তাৎক্ষণিক ক্ষোভ ও দরপতন সৃষ্টি করলেও, এখন কোম্পানি দুটির ব্যবস্থাপনার দক্ষতা এবং আগামী অর্থবছরের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করেই বিনিয়োগকারীদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত