ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ৩,৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দিল ইসরায়েল

২০২৫ অক্টোবর ১৪ ০৯:২৫:৫৯

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ৩,৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দিল ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিনে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে ইসরায়েল। চুক্তির অংশ হিসেবে দেশটি তাদের কারাগার থেকে ৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। সোমবার এই বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় কারাগার দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগ।

মুক্তিপ্রাপ্তদের দুটি ব্যাচে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ব্যাচে ছিলেন প্রায় ২ হাজার বন্দি, যাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে পশ্চিম তীরের রাজধানী রামাল্লার পশ্চিমাংশে অবস্থিত ইসরায়েলি কারাগার ‘ওফের’ থেকে। দুপুরের দিকে তারা রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় বাসে করে বেইতুনিয়া শহরে পৌঁছান।

অন্যদিকে, প্রায় একই সময়ে দক্ষিণ ইসরায়েলের নাগেভ কারাগার থেকে মুক্তি পান দ্বিতীয় ব্যাচের ১ হাজার ৭১৮ বন্দি, যারা পরে গাজার খান ইউনিস শহরে পৌঁছান। এদের মধ্যে ২৫০ জন ছিলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরা সবাই ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় অভিযানের সময় গ্রেপ্তার হন।

মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের প্রাথমিক চিকিৎসা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় নাসার মেডিকেল কমপ্লেক্সে। তাদের স্বাগত জানাতে বেইতুনিয়া ও খান ইউনিসে শত শত ফিলিস্তিনি জড়ো হন, অনেকে আনন্দ উদযাপন করেন পরিবারের সদস্যদের ফিরে পাওয়ার খুশিতে।

ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের সূত্রপাত হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন প্রায় ১ হাজার হামাস যোদ্ধা ইসরায়েলে প্রবেশ করে ভয়াবহ হামলা চালায়। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিনই প্রতিশোধমূলক অভিযানে নামে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ), যা দুই বছরের ভয়াবহ যুদ্ধের সূচনা করে। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছেন।

দীর্ঘ এই সংঘাতের অবসানে একাধিকবার যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নেওয়া হলেও এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। গত শুক্রবার থেকে কার্যকর হওয়া এই যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবেই সোমবার ইসরায়েল বন্দি বিনিময়ের ঘোষণা দেয়।

শেষ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন জিম্মি আটক ছিল হামাসের হাতে। তবে গোষ্ঠীটি আগেই জানিয়েছিল, কাগজে-কলমে ৪০ জন থাকলেও এই জিম্মিদের মধ্যে বর্তমানে জীবিত আছেন ২০ জন।

ফলে চুক্তি অনুযায়ী, হামাস মুক্তি দিয়েছে অবশিষ্ট ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে, বিনিময়ে ইসরায়েলও মুক্তি দিয়েছে ৩,৭০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে। ইসরায়েল স্পষ্ট জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো বন্দি এই মুক্তির আওতায় পড়েননি।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত