ঢাকা, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২

আকস্মিক বন্যায় নেপালে নি'হতের ঢল

২০২৫ অক্টোবর ০৫ ১৭:১৪:০১

আকস্মিক বন্যায় নেপালে নি'হতের ঢল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালে টানা ভারি বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড় ধস ও আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে সেতু, সড়ক ও ঘরবাড়ি ধসে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

নেপালের সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর মুখপাত্র কালিদাস ধৌবোজি জানান, ভারতের সীমান্তঘেঁষা পূর্বাঞ্চলীয় ইলাম জেলায় পৃথক পাহাড় ধসে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই দুর্যোগে এখনো ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া বজ্রপাতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র শান্তি মহাত বলেন, নিখোঁজদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও পুলিশ একযোগে তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে টানা বৃষ্টিতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে, আরও ভারি বৃষ্টির আশঙ্কায় সরকার সোমবার ও মঙ্গলবার দেশজুড়ে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। জরুরি সেবা ও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত সংস্থাগুলো এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবে।

আবহাওয়া অধিদফতর ১২টিরও বেশি জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। বিভাগের প্রধান কমল রাম জোশি জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে নদীতীরবর্তী এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, বাগমতী, গণ্ডকি, লুম্বিনি ও মদেশ প্রদেশে বৃষ্টিপাত আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডুর কিছু অংশেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

দুর্যোগে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির পরিবহন অবকাঠামো। পাহাড় ধসে কাঠমান্ডুর সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কাঠমান্ডু-চীন সীমান্ত সংযোগকারী আরণিকো মহাসড়কের একাধিক অংশ ধসে পড়েছে, পূর্বাঞ্চলের বিপি মহাসড়কও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে শনিবার নেপালের সব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো আংশিকভাবে চালু থাকলেও বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের মুখপাত্র রিঞ্জি শেরপা।

এই প্রবল বর্ষণ এমন সময়ে শুরু হয়েছে, যখন লক্ষাধিক মানুষ দেশজুড়ে দশাইন উৎসব শেষে কর্মস্থলে ফিরছিলেন। দুই সপ্তাহব্যাপী এই ধর্মীয় উৎসবের প্রধান দিন ছিল বৃহস্পতিবার, যেদিন মানুষ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে মিলিত হন।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক অবস্থা তৈরি হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব নেপালের কোসি নদীতে। স্থানীয় কর্মকর্তা ধর্মেন্দ্র কুমার মিশ্র জানান, পানির স্তর স্বাভাবিকের দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ায় কোসি ব্যারাজের সব ৫৬টি গেট খুলে দিতে হয়েছে। সাধারণত ১০ থেকে ১২টি গেট খোলা হয়। নদীর সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল সীমিত করার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত