ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২
টেকসই অর্থায়নের দিগন্ত প্রসারে বিএসইসি’র বড় পদক্ষেপ

হাসান মাহমুদ ফারাবী
রিপোর্টার

হাসান মাহমুদ ফারাবী: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) দেশের টেকসই অর্থায়ন কাঠামোকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ঋণপত্র বিধিমালা, ২০২১-এ বড় ধরনের সংশোধনী প্রস্তাব করেছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো পরিবেশগত ও সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ আকর্ষণ করা।
খসড়া নির্দেশিকাটি ইতিমধ্যেই বিএসইসি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে এবং ৮ অক্টোবর পর্যন্ত জনমতের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। নতুন বিধিমালায় ইস্যুকারীদের জন্য স্বচ্ছতা, রিপোর্টিং এবং তথ্য প্রকাশের কড়া শর্তাবলী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সংশোধিত খসড়ায় বেশ কিছু থিমেটিক বন্ড চালুর প্রস্তাব রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জেন্ডার বন্ড, অরেঞ্জ বন্ড, সাসটেইনেবিলিটি বন্ড, গ্রিন বন্ড এবং সোশ্যাল বন্ড। এই বন্ডগুলো পরিবেশগত টেকসইতা, লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা আশা করছে, এই পরিবর্তন বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং দায়িত্বশীল তহবিল সংগ্রহে সহায়ক হবে।
প্রস্তাবিত বিধিমালায় গ্রিন বন্ডকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিচ্ছন্ন পরিবহন, জলবায়ু অভিযোজন এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের মতো প্রকল্পে এই অর্থায়ন ব্যবহৃত হবে।
বিএসইসি ‘গ্রিন প্রকল্প’ ধারণারও প্রবর্তন করেছে। এখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেকসই জল ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ইকো-দক্ষ পণ্য এবং সবুজ ভবনের মতো প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত হবে, যার পরিমাপযোগ্য পরিবেশগত সুবিধা বিশেষজ্ঞদের দ্বারা যাচাইযোগ্য।
সোশ্যাল বন্ডের ক্ষেত্রেও সম্প্রসারণ হয়েছে। সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা, এসএমই অর্থায়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পগুলো সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুবিধা প্রদান করবে।
নতুন সংযোজন: জেন্ডার, অরেঞ্জ ও সাসটেইনেবিলিটি বন্ড
• জেন্ডার বন্ড: নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতা উন্নয়নের প্রকল্পে তহবিল দেবে।
• অরেঞ্জ বন্ড: নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়াও সামাজিক ও টেকসই লক্ষ্যসমূহকে বিস্তৃত করবে।
• সাসটেইনেবিলিটি বন্ড: গ্রিন এবং সোশ্যাল বন্ডের বৈশিষ্ট্য মিলিয়ে পরিবেশগত ও সামাজিক প্রকল্পে তহবিল দেবে।
বিএসইসি’র লক্ষ্য ও স্বচ্ছতার ওপর জোর
বিএসইসি পরিচালক আবুল কালাম বলেন, “আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের টেকসই অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং এসডিজি অর্জনে অবদান রাখা। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা প্রকল্পের টেকসইতা যাচাই করছেন, তাই আমাদের নির্দেশিকায় স্বচ্ছতা ও রিপোর্টিং জোরদার করা হয়েছে।”
তহবিল ব্যবস্থাপনা ও প্রয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে, ইস্যুকারীকে তহবিলের ব্যবহার, প্রকল্প নির্বাচনের মানদণ্ড এবং প্রত্যাশিত প্রভাব প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া তহবিল ব্যবস্থাপনা যাচাইয়ের জন্য স্বাধীন নিরীক্ষক নিয়োগ বাধ্যতামূলক।
টেকসই বন্ড ইস্যুর জন্য বিএসইসি ফি হ্রাসের প্রস্তাব দিয়েছে। যেখানে সাধারণ ঋণপত্রের জন্য ০.১০% ফি প্রযোজ্য, সেখানে টেকসই বন্ড ইস্যুকারীদের জন্য ফি মাত্র ০.০৩% হবে। এছাড়া আবেদনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রক্রিয়াকরণ করা হতে পারে।
উপযুক্ত খাতের মধ্যে পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের জন্য সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ, টেকসই কৃষি এবং পরিবেশ-বান্ধব পরিবহন অন্তর্ভুক্ত। সামাজিক অর্থায়নের জন্য সাশ্রয়ী আবাসন, নারী-মালিকানাধীন ব্যবসা ও শিক্ষা প্রকল্প চিহ্নিত হয়েছে। নেতিবাচক সামাজিক প্রভাব ফেলে এমন কার্যক্রম—যেমন জুয়া, তামাক ও অস্ত্র উৎপাদন—নির্দেশিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এএসএম/
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান,সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে শেয়ারবাজারের ৮ কোম্পানি
- দুই বছরের ডিভিডেন্ড পেল তালিকাভুক্ত কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৬ কোম্পানি
- বিএসইসি-ডিএসই’র নাকের ডগায় লোকসানি শেয়ার নিয়ে কারসাজি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইবনে সিনা ফার্মা
- চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের প্রতারণার চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- দু্ই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- নয় কোম্পানির শেয়ারে মুভিং এভারেজ,ম্যাকডি, এঙ্গালফিং বাই সিগনাল
- শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থনীতির দুই শীর্ষ নেতার কড়া সমালোচনা
- ১৪ প্রতিষ্ঠান রদবদলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা অন্ধকারে, বাড়ছে আতঙ্ক
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিনিয়োগ বেড়েছে ৪ কোম্পানিতে
- মুনাফা কমেছে জুতাশিল্পের দুই জায়ান্টের