ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ আশ্বিন ১৪৩২

জাল নোটের ভয়াবহ ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশ

২০২৫ অক্টোবর ০২ ১১:৪২:০৪

জাল নোটের ভয়াবহ ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের অর্থনীতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে বিপুল পরিমাণ জাল নোট দেশে ঢোকানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন, আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।

বুধবার (১ অক্টোবর) সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, পার্শ্ববর্তী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বিভিন্ন রুটে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার জাল নোট বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

তার ভাষ্যমতে, জাল নোটগুলো এমন নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয়েছে যে তা খালি চোখে আসল টাকার থেকে আলাদা করা কঠিন। এমনকি দেশের ব্যাংকগুলোতে ব্যবহৃত অটোমেটেড মেশিনেও এসব নোট শনাক্ত করা যাচ্ছে না। নোট তৈরিতে আসল মুদ্রার মতো একই ধরনের কাগজ, নিরাপত্তা সুতার প্রলেপ এবং হুবহু মিল থাকা হলোগ্রাম ব্যবহার করা হয়েছে।

জুলকারনাইন আরও দাবি করেন, এসব নোট ভারতের অভ্যন্তরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রিত মুদ্রা ছাপাখানাতেই তৈরি করা হয়েছে, যেখানে দেশটির নিজস্ব মুদ্রাও ছাপানো হয়। সেখান থেকে গোপন পরিকল্পনার মাধ্যমে নোটগুলো সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

পোস্টে তিনি কয়েকটি ছবি ও স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। এর একটিতে হিন্দি ভাষায় লেখা ছিল— “ভাই, আপনি কি মাল নিতে যাচ্ছেন? আগামীকাল আমার কাছে আরও দুটি পার্সেল থাকবে, চাইলে আপনার মালও সেগুলোর সঙ্গে পাঠিয়ে দেব। বিকাশে ৫০০ টাকা পাঠিয়ে অর্ডার কনফার্ম করুন।

আরেকটি বার্তায় লেখা ছিল, আমি একটি নম্বর দিচ্ছি। ওই নম্বরে বিকাশে টাকা দিয়ে নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর পাঠান। মাল দুদিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে।

তার দাবি অনুযায়ী, এসব জাল নোট অত্যন্ত কম দামে বাংলাদেশের চক্রগুলোর কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে। মূল লক্ষ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করা, সন্ত্রাস ও নাশকতায় অর্থায়ন করা এবং ভেতর থেকে অর্থনীতিকে ধ্বংস করা।

তিনি জানান, বিষয়টি সীমান্তরক্ষী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা ইউনিটগুলো অবগত আছে এবং প্রতিরোধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তবে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হওয়ায় জনসচেতনতা তৈরি করাকেও তিনি জরুরি বলে মনে করেন।

পোস্টে জুলকারনাইন সতর্ক করে বলেন, যদি এসব নোট বাজারে প্রবেশ করে, তাহলে তা সাধারণ মানুষের সঞ্চিত অর্থকেও ঝুঁকির মুখে ফেলবে এবং দেশের অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে।

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার বা অভিযুক্ত দেশের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে সাংবাদিকের এই পোস্ট প্রকাশিত হওয়ার পর সচেতন মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি পাঠকদের উদ্দেশে আহ্বান জানান, ব্যাংকিং লেনদেনে সতর্ক থাকতে, সন্দেহজনক নোট পেলে দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানাতে এবং বাজারে লেনদেনের সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে। তার মতে, যদি তথ্যগুলো সঠিক হয়, তবে এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধেও ভয়ংকর ষড়যন্ত্র। এজন্য তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানান।

একে

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত