ঢাকা, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২

বিসিবি নির্বাচন: নির্বাচন ঘিরে দ্বন্দ্ব ও তামিমের বিষ্ফোরক মন্তব্য

২০২৫ অক্টোবর ০১ ২২:৫৯:৫৬

বিসিবি নির্বাচন: নির্বাচন ঘিরে দ্বন্দ্ব ও তামিমের বিষ্ফোরক মন্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিসিবির বোর্ড নির্বাচনের তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ অক্টোবর ২০২৫ নির্ধারিত থাকলেও সাম্প্রতিক আইনি প্রক্রিয়া এবং প্রার্থীদের প্রত্যাহারের কারণে নির্বাচনী পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। উচ্চ আদালত কয়েকটি ক্লাবকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার স্টে জারি করেছে, যা এখন এই নির্বাচনের প্রধান আইনি মোড় ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।

নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া কয়েকজন প্রভাবশালী প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল-এর প্রত্যাহার, তিনি অভিযোগ করেছেন নির্বাচন ফিক্সড এবং এটি ক্রিকেটের স্বার্থে উপযুক্ত নয়।

ফলে অনেক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে গেছে। বিশেষ করে আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং নাজমুল আবেদীন ফাহিম অনুপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বীর কারণে কার্যত নিঃপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচনী দৌড়ে উঠেছেন বলে খবর এসেছে।

সময়সূচি ও নির্বাচনী কাঠামো

বিসিবির নির্বাচন বোর্ডের ঘোষিত দিন: নির্বাচন ৬ অক্টোবর ২০২৫-এ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও চলমান আইনি জটিলতার কারণে চূড়ান্ত ফলাফলে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বোর্ড নির্বাচনে মোট ২৫টি পরিচালকীয় পদ বা সমতুল্য পদ রয়েছে, যা সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত। ভোটাররা বিভিন্ন ক্যাটাগরির ক্লাব, বিভাগ ও জেলা কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ভোট প্রদান করবেন।

মনোনয়ন-পদ্ধতি ও বৈধতা

নির্বাচনে মোট প্রায় ৫০–৫১ জন মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল সেগুলো যাচাই প্রক্রিয়ার পর ৪৮টি মনোনয়ন বৈধ হিসেবে ঘোষণা করা হয় অর্থাৎ বেশ কিছু কাগজপত্র বাতিল বা সমস্যাযুক্ত ছিল।

মনোনয়ন যাচাই শেষ হওয়ার পরও ১৬ জন প্রার্থী আত্মপক্ষ সমর্থন না করেই বা প্রতিবাদ হিসেবে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন এর ফলে অনেক কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমে এসেছে।

উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ ১৫ ক্লাবের স্টে

একটি উচ্চ আদালতের বেঞ্চ ১৫টি ক্লাবকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বারণ/স্টে জারি করেছে কারণ ওই ক্লাবগুলো আন্তঃনিয়ম বা দুর্নীতি-সংক্রান্ত তদন্তে ছিল বলে আদালত উল্লেখ করেছে। এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনী ভূমিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে।

উপর্যুক্ত হাইকোর্ট আদেশকে কেন্দ্র করে কিছু ক্লাব কাউন্সিলর নির্বাচন থেকে বিরতিই বা বয়কট করার হুমকি দিয়েছেন তারা বলছেন বিনা ন্যায়ের পরিস্থিতিতে ভোট দেওয়ার মানে নেই।

প্রার্থীর তালিকা ও বিশিষ্ট নামচিত্র

আমিনুল ইসলাম বুলবুল কার্যত দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বীর কারণে (কিছু প্রতিদ্বন্দ্বীর বাতিল/প্রত্যাহার) ঢাকার থেকে নির্বিচারে নির্বাচিত হয়ে যাবেন এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

নাজমুল আবেদীন ফাহিম সম্ভাব্য সহ-নির্বাচিত/ভাইস-চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রার্থী অনুপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বীর কারণে অনানুষ্ঠানিকভাবে সুবিধা পেয়েছেন বলে আভাস।

তামিম ইকবাল নির্বাচনী ময়দানে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন কিন্তু ১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে তিনি বলেন নির্বাচন ফিক্সড এবং এটি ক্রিকেটের উপযোগী নয় তার প্রত্যাহার প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে বড় ধরণের সমালোচনাও উঠেছে।

আব্দুর রাজ্জাক জাতীয় সিলেক্টর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সরাসরি বিসিবি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তিনি খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশাসনে ঢুকতে চান।

প্রত্যাহার-প্রবণতা ও তার প্রভাব

মোট ১৬ জন প্রার্থী প্রত্যাহার করে ফেলায় নির্বাচনী তালিকা সংকুচিত হয়েছে ক্লাব ক্যাটাগরিতে বিশেষ করে ৩০ জন মনোনয়নকারী থেকে ১৩ জন প্রত্যাহার করেছেন ফলে ক্লাবভিত্তিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নীরব আন্দোলনে গিয়েছে।

এই প্রত্যাহার ও উচ্চ আদালতের স্টে দুটো মিলিত হয়ে নির্বাচনকে বিচ্ছিন্ন বা অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে নির্ধারিত প্রতিযোগিতা থেকে বিরত রেখে দিয়েছে বহুকাল ধরে ভবিষ্যৎ ক্রিকেট ব্যবস্থাপনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বিভিন্ন বিশ্লেষক এটিকে চলমান রাজনৈতিক/সাংগঠনিক হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

ভোটার তালিকা ও রোডম্যাপ

নির্বাচন কমিশন ও বিসিবির রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ক্যোর্ডিনেটেড তালিকা প্রকাশ করেছেন ভোটারদের তালিকায় ক্লাব, জেলা প্রতিনিধিরা আছেন তবে হাইকোর্ট স্টে ও বাদপড়া ক্লাবের কারণে তালিকায় পরিবর্তন আসছে।

প্রার্থী/কমিটি গঠন হলে রিটার্নিং অফিসারের চূড়ান্ত ঘোষণা ও ভোটগ্রহণ সংক্রান্ত সময়সূচি প্রকাশ করা হবে বর্তমান অবস্থায় তা অচল নয়, তবে অস্থির।

ক্লাব পর্যায়ের প্রতিক্রিয়া ও সম্ভাব্য বয়কট

উচ্চ আদালতের স্টে জারির পর কয়েকটি ক্লাব কাউন্সিলর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন they may boycott or withdraw support, কারণ বিচারবহির্ভূত সিদ্ধান্তে ভোটের সার্বভৌমতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

গণমাধ্যমে ওঠা অভিযোগ নির্বাচন ফিক্সিং সন্দেহ

সাবেক ক্রিকেটার ও প্রাক্তন প্রার্থীরা নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সরাসরি Election fixing (নির্বাচন ঠিক করা) অভিযোগ তুলেছেন তামিমের প্রত্যাহারও এই মুদ্রাকে জোরালো করেছে। তিনি বলেন এটা নির্বাচন নয় এবং অনেকে আদৌ অংশ বা সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন।

আইনি অগ্রগতি ও চেম্বার জজ কার্যক্রম

হাইকোর্টের স্টে বিষয়ে চেম্বার জজের পর্যায়ে অনেকে আপিল করতে পারেন এর ফলে হাইকোর্ট চেম্বার সুপ্রিম কোর্ট পর্যায়ের পারস্পরিক প্রবাহ নির্বাচনকে সঙ্গে সঙ্গে প্রভাবিত করছে। কিছু সংবাদে বলা হয়েছে চেম্বার জজ হাইকোর্ট আদেশকে কিছুক্ষণের জন্য সসপেন্ড করেছেন আইনি লড়াই চলমান।

প্রার্থীর পেশাগত প্রেক্ষাপট ও অভ্যর্থনা

অনেক সাবেক ক্রীড়াবিদ (যেমন রাজারাজ্জাক) ক্রিকেট প্রশাসনে আসার চেষ্টা করছেন তারা খেলোয়াড়-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রশাসনে আনবেন এমন আশায়।

জনমতের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ সংশয়

সাধারণ পড়ুয়া-দর্শক ও ক্রিকেট সারাংশ বিশ্লেষকরা বলছেন এই নির্বাচনী গোলযোগ দেশের ক্রিকেটের স্বচ্ছতা ও ধারাবাহিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যারা ক্রিকেট প্রশাসনকে খেলোয়াড়-বান্ধব করতে চায়, তাঁরা উদ্বিগ্ন।

পরামর্শ ও পরবর্তী ধারা

আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চেম্বার/সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সময়সূচি ও ফলাফল নির্বাচনকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বদলে দিতে পারে।

প্রার্থীর প্রত্যাহার ও পুনরায় মনোনয়ন প্রত্যাহার স্বাভাবিকভাবেই প্রার্থী তালিকাকে খালি করে দিচ্ছে কোন দল/ফ্রন্ট নতুন যোগ দিতে চাইলে তা পরবর্তী কালে দেখা যাবে।

ক্লাব কাউন্সিলরের রুখে দাঁড়ানো যদি বড় সংখ্যক কাউন্সিল রুঠে যায় বা বয়কট করে, ভোটাভুটি বাস্তবেই অনাহূতি হবে।

সংক্ষিপ্ত উপসংহার

বিসিবি নির্বাচন বর্তমানে কেবল কোনো সংগঠনিক ইভেন্ট নয় এটি ক্রিকেট প্রশাসনে স্বচ্ছতা, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, এবং খেলোয়াড়-অভিজ্ঞতা সংরক্ষণ সম্পর্কে একটি জাতীয় বিতর্কে পরিণত হয়েছে। আদালত, ক্লাব-চ্যানেল, প্রার্থীর প্রত্যাহার এবং গণমত সব মিলিয়ে ৬ অক্টোবর-এর আগে পরিস্থিতি কিভাবে মীমাংসা হয়, তা ক্রিকেট ফেডারেশনের ভবিষ্যৎ নির্দেশ করবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত