ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ আশ্বিন ১৪৩২

আমদানিকৃত ওষুধের ওপর ট্রাম্পের ১০০% শুল্ক আরোপ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৬ ২১:৫৬:৫৪

আমদানিকৃত ওষুধের ওপর ট্রাম্পের ১০০% শুল্ক আরোপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার রাতে এক আকস্মিক ঘোষণায় ব্র্যান্ডেড ওষুধ, বড় ট্রাক, ঘর সংস্কারের সরঞ্জাম এবং আসবাবপত্রের ওপর কঠোর শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছেন, যা তার বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের কৌশলকে আবার সক্রিয় করে তুলল। গত এপ্রিলের পর এটিই তার সবচেয়ে কঠিন বাণিজ্য নীতি।

নতুন এই শুল্কগুলি আগামী ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে এবং এর লক্ষ্য মার্কিন উৎপাদন খাতকে শক্তিশালী করা।

ফার্মাসিউটিক্যালস: ১০০% শুল্কের হুঁশিয়ারি

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্ট করা ফার্মাসিউটিক্যাল প্রোডাক্টের ওপর ১০০% শুল্ক আরোপ করা হবে। তবে এর একটি শর্ত রয়েছে— যদি কোনো কোম্পানি আমেরিকায় তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল উৎপাদন কারখানা তৈরি করে, তবে তাদের ক্ষেত্রে এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হল বিদেশী ওষুধ কোম্পানিগুলিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ এবং উৎপাদন করতে উৎসাহিত করা।

বড় ট্রাক ও জাতীয় নিরাপত্তা

ট্রাম্প পৃথিবীর অন্যান্য অংশে তৈরি হওয়া সমস্ত 'হেভি (বিগ) ট্রাকের' ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই শুল্ক আরোপের প্রধান কারণ হল "জাতীয় নিরাপত্তা"। এর মাধ্যমে তিনি পিটারবিল্ট, কেনওর্থ, ফ্রেইটলাইনার, ম্যাক ট্রাকস-এর মতো মার্কিন প্রস্তুতকারকদের সমর্থন দিতে চাইছেন।

এই ঘোষণার পর সুইডেনের ভলভো এবং জার্মানির ডেমলারের (যার ফ্রেইটলাইনার ব্র্যান্ড রয়েছে) মতো বিদেশী কোম্পানির শেয়ারের দাম ইউরোপে লেনদেন পরবর্তী সময়ে (আফটার-আওয়ার্স ট্রেডিং) তীব্রভাবে হ্রাস পেয়েছে।

উল্লেখ্য, এই বছরের শুরুতে, ট্রাম্প প্রশাসন ট্রাক আমদানির উপর সেকশন ২৩২ তদন্ত শুরু করেছিল। এই আইনের বলে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ বা নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির রয়েছে।

ঘর সংস্কারের উপকরণ ও আসবাবপত্র

রিয়েল এস্টেট মোগল ট্রাম্প এবার ঘর সংস্কারের উপকরণেও নজর দিয়েছেন। ১ অক্টোবর থেকে সমস্ত রান্নাঘরের কেবিনেট, বাথরুমের ভ্যানিটি এবং সম্পর্কিত পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক এবং আপহোলস্টার্ড আসবাবপত্রের ওপর ৩০% শুল্ক ধার্য করা হবে।

ইউনাইটেড স্টেটস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশন (USITC)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে মার্কিন বাজারে বিক্রি হওয়া মোট আসবাবপত্রের ৬০ শতাংশই আমদানি করা হয়েছিল, যার বেশিরভাগই আসে এশিয়া থেকে। এই ঘোষণার ফলে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর নির্ভরশীল হোম ফার্নিচার বিক্রেতা ওয়েফেয়ার এবং উইলিয়ামস সোনোমা-এর শেয়ারের দামও কমে গেছে।

মুদ্রাস্ফীতি ও সুরক্ষাবাদী নীতি

বিশ্লেষকদের মতে, এই নতুন শুল্কের ঢেউ বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলবে। ট্রাম্পের এই সুরক্ষাবাদী নীতি আধুনিক মার্কিন নীতির বিপরীত, যা একটি উন্মুক্ত এবং আমদানি-নির্ভর অর্থনীতিকে উৎসাহিত করে।

পূর্বে, ট্রাম্প প্রশাসন সমস্ত দেশের ওপর ১০ শতাংশ বেসলাইন শুল্ক আরোপ করেছিল এবং বাণিজ্য চুক্তির অংশীদার কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের ওপর ফেন্টানাইল চোরাচালান এবং অবৈধ অভিবাসনের কারণে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করে অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছিল। তবে, এই নতুন শুল্কগুলি বিদ্যমান ব্যবস্থার সাথে কীভাবে যুক্ত হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

এএসএম/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত