ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২

সাত কলেজের চলমান ব্যাচের সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৬ ০১:১৩:০৯

সাত কলেজের চলমান ব্যাচের সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে নিয়ে প্রস্তাবিত 'ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি'র খসড়া অধ্যাদেশ প্রকাশিত হওয়ার পর, চলমান ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) জানিয়েছে, চলতি সেশনে যারা ভর্তি হয়েছেন, তারা ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন যদি দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সহ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। অন্যথায়, ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ ব্যাচ সহ চলমান শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ নিতে হবে।

ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ বছরই কোর্স শেষ করবেন। যদি সনদ অথরিটি তৈরি না হয়, তাহলে তাদের ঝুঁকি থাকবে এবং সেক্ষেত্রে তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই সনদ দেওয়া হবে, কারণ তারা বিদ্যমান কাঠামোতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হয়েছেন। তবে প্রথম থেকে তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত কোনো সমস্যা হবে না।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে এবং মতামতের জন্য অনলাইনে উন্মুক্ত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ইউজিসিতে গিয়ে চলমান ব্যাচগুলোকে (অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্স) প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে, প্রস্তাবিত রূপরেখায় কেবল নতুন শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, অথচ দীর্ঘ দিন ধরে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির আন্দোলন চালিয়ে আসা চলমান ব্যাচগুলোর প্রতি কোনো দৃষ্টি দেওয়া হয়নি, যা তাদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করবে।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ সহ বর্তমানে অধ্যয়নরত সকল শিক্ষার্থীকে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির আওতায় আনতে হবে। তাদের দাবি অগ্রাহ্য করা হলে বৃহত্তর কর্মসূচির দিকে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

এদিকে, গত মঙ্গলবার ও বুধবার ঢাকা কলেজ এবং বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও উদ্বেগ জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। তারা বলছেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারীদের উচ্চশিক্ষার পথ সংকোচন এবং উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণি বন্ধ করার পাঁয়তারা চলছে, যা তারা মানবেন না। এই উদ্যোগে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়নি বলেও তারা অভিযোগ করেন।

প্রস্তাবিত খসড়ায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের কলেজগুলোর বিদ্যমান পরিচয়, বৈশিষ্ট্য, অবকাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অক্ষুণ্ণ থাকবে। ভৌত অবকাঠামোর যৌথ ব্যবহার সহ বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ত্রিপক্ষীয় চুক্তির ভিত্তিতে যৌথ ব্যবহার ও অংশীদারিত্ব নির্ধারিত হবে। ইউজিসি এই চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ নেবে।

ইউজিসি আরও জানিয়েছে, যেহেতু সাত কলেজ ক্যাম্পাসে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম চলবে, তাই সাত কলেজের উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তিতে বিশেষ সুযোগ পাবেন। তবে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করবে।

উল্লেখ্য, ঢাকার সরকারি সাত কলেজ (ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ) ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। তবে নানা সমস্যা ও শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তি থেকে বাদ দিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত