ঢাকা, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

উত্তর কোরিয়ায় সিরিজ দেখলেই মৃত্যুদণ্ড

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১২:৩৮:১২

উত্তর কোরিয়ায় সিরিজ দেখলেই মৃত্যুদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের নেতৃত্বে গত এক দশকে দেশটিতে দমননীতি আরও কঠোর হয়েছে বলে জাতিসংঘের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিদেশি নাটক ও সিনেমা দেখা বা শেয়ার করার মতো কর্মকাণ্ডের জন্যও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে। খবর আল জাজিরার।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর শুক্রবার জানায়, কিম রাজবংশের সাত দশকের শাসনকালে জনগণ দীর্ঘ সময় ধরে ভোগান্তি, দমন এবং ভয়-ভীতির মধ্যে বসবাস করছে। প্রযুক্তি-নির্ভর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গত কয়েক বছরে আরও বিস্তৃত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমান পৃথিবীতে কোনো জনগোষ্ঠী এত সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ নয়। দেশ ছেড়ে পালানো এক সাক্ষী জানান, মানুষের চোখ-কান বন্ধ রাখতে এই দমননীতি আরও জোরদার করা হয়েছে, যাতে সামান্যতম অসন্তোষ বা অভিযোগেরও জায়গা না থাকে।

জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের উত্তর কোরিয়া মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রধান জেমস হিনান বলেন, কোভিড-যুগের পর থেকে সাধারণ অপরাধ ও রাজনৈতিক অপরাধ উভয়ের জন্য মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা বেড়েছে। বিদেশি টিভি সিরিজ, বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় কে-ড্রামা ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে অজ্ঞাত সংখ্যক মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১০ বছরে প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে নাগরিকদের জীবনের প্রতিটি দিক নজরদারির আওতায় এসেছে। হিনান জানান, শিশুদেরও কয়লাখনি ও নির্মাণকাজের মতো বিপজ্জনক খাতে ‘শক ব্রিগেড’-এর অংশ হিসেবে বাধ্যতামূলক শ্রমে নিযুক্ত করা হচ্ছে।

এটি এক দশকেরও বেশি সময় পর জাতিসংঘের প্রকাশিত সবচেয়ে বিস্তৃত প্রতিবেদন। এর আগে প্রকাশিত ঐতিহাসিক প্রতিবেদনে মৃত্যুদণ্ড, ধর্ষণ, নির্যাতন, অনাহার এবং ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষকে বন্দিশিবিরে আটক রাখার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য উঠে এসেছিল।

নতুন প্রতিবেদনে ২০১৪ সালের পর গৃহীত আইন, নীতি ও প্রক্রিয়ার বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যা দমননীতির জন্য আরও দৃঢ় আইনি কাঠামো তৈরি করেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেন, “যদি ডিপিআরকে (উত্তর কোরিয়া) বর্তমান গতিপথে এগোয়, তবে জনগণ আরও বেশি ভোগান্তি, কঠোর দমননীতি এবং ভয়-ভীতির শিকার হবে।”

জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য জানায়নি উত্তর কোরিয়ার জেনেভা মিশন কিংবা লন্ডন দূতাবাস।

ইএইচপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত