ঢাকা, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২
দেশে গণপিটুনিতে নিহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে অপরাধের চিত্র উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে। খুন, নারী-শিশু নির্যাতন, ছিনতাই, ডাকাতি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সহিংসতা—সব মিলিয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনাও বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বাহিনীর আরও কঠোর ও সক্রিয় পদক্ষেপ জরুরি হয়ে উঠেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে মামলা হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৭৮৩টি। এর মধ্যে খুনের মামলা ২ হাজার ২৯৩টি, নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা ১৩ হাজার ১৩০টি, অপহরণের ৬২৫টি এবং ছিনতাই-চুরির মামলা হয়েছে ৫ হাজার ৩৮৭টি। এছাড়া ডাকাতি, দস্যুতা, সিঁধেল চুরি ও দাঙ্গাসহ অসংখ্য অপরাধের মামলা হয়েছে। তুলনায় ২০২৪ সালে খুনের মামলা ছিল ৩ হাজার ৪৩২টি এবং নারী-শিশু নির্যাতনের মামলা ১৭ হাজার ৫৭১টি।
পুলিশের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনাও কম নয়। সাত মাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৩৬৮টি।
মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) জানিয়েছে, গণপিটুনির ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। শুধু আগস্টেই এমন ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ জন, গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৪৩ জন। জুলাই মাসে নিহত হয়েছিলেন ১৬ জন। নিহতদের মধ্যে চুরির অভিযোগে ১০ জন, সন্দেহভাজন হিসেবে ৪ জন, ডাকাতির অভিযোগে ৩ জন, ছিনতাইয়ের অভিযোগে ২ জন, পূর্বশত্রুতার জেরে ২ জন (যার মধ্যে ১ জন নারী), মাদক মামলার অভিযুক্ত ১ জন এবং চাঁদাবাজির অভিযোগে ১ জন ছিলেন।
নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাও উদ্বেগজনক। আগস্ট মাসে ৩৪৯টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ধর্ষণ ৪৭টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৯টি, ধর্ষণ ও হত্যা ৪টি। ভুক্তভোগীদের মধ্যে শিশু, কিশোরী, নারী এমনকি প্রতিবন্ধীও রয়েছেন। একই মাসে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে ২৪টি, যৌন হয়রানি ২১টি ও শারীরিক নির্যাতন ৯৪টি।
রাজনৈতিক সহিংসতার চিত্রও নড়বড়ে। আগস্ট মাসেই সহিংসতার ৪৯টি ঘটনায় ৫৪৯ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নিহত এবং ৫৪৭ জন আহত হন। পার্টি অফিস, বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে হামলা, অগ্নিকাণ্ড ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। সংঘর্ষগুলোর বড় অংশ বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, আবার কিছু আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে পারস্পরিক সংঘর্ষ থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক মনে করেন, দেশে একটি চক্র অপরাধকে আয়ের উৎসে পরিণত করেছে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও অপরাধ দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।
এমজে
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- এক হাজার কোটি টাকার মামলায় শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
- রবির মাধ্যমে দেশে আসছে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
- শেয়ার কারসাজিতে ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- সর্বোচ্চ চাহিদায় নাগালের বাইরে ১৪ প্রতিষ্ঠান
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- এক কোম্পারি অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে তোলপাড়
- মুনাফা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হাক্কানী পাল্প
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন হাউজিং
- পাঁচ কোম্পানির কারণে থমকে গেল শেয়ারবাজারের উত্থান