ঢাকা, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

শেয়ারবাজারের ১৭ কোম্পানির দামে ধস, বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা

মোবারক হোসেন
মোবারক হোসেন

সিনিয়র রিপোর্টার

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১১:৫০:৪৭

শেয়ারবাজারের ১৭ কোম্পানির দামে ধস, বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা

মোবারক হোসেন: শেয়ারবাজারে অস্থিরতার মধ্যে এক বছরের ব্যবধানে ১৭টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারদাম অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে। এর মধ্যে নিউলাইন ক্লথিংয়ের দরপতন সবচেয়ে বেশি—৮১ শতাংশেরও বেশি। তবে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারদামের এই ধস বিনিয়োগকারীদের জন্য একদিকে যেমন সতর্কবার্তা, অন্যদিকে খাত পুনর্গঠন ও মার্জারের সম্ভাবনা নতুন ভরসার জায়গা তৈরি করছে।

১৭ কোম্পানির বড় দরপতন

স্টকনাওয়ের তথ্য অনুযায়ী,কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে নিউলাইন ক্লথিং বছরের সর্বোচ্চ দাম ৩৫ টাকা ৫০ পয়সা থেকে নেমেছে ৬ টাকা ১০ পয়সায়, জিএসপি ফাইন্যান্স ১১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে নেমেছে ৩ টাকা ১০ পয়সায়, ইউনিয়ন ব্যাংক ৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে নেমেছে ২ টাকায়, পিপলস লিজিং ৩ টাকা ৭০ পয়সা থেকে নেমেছে ১ টাকা ২০ পয়সায়, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৭ টাকা ৭০ পয়সা থেকে নেমেছে ২ টাকা ৩০ পয়সায়, ফারইস্ট ফাইন্যান্স ৫ টাকা থেকে নেমেছে ১ টাকা ৫০ পয়সায়।

এছাড়া, সাইফ পাওয়ার ২০ টাকা ৩০ পয়সা থেকে নেমেছে ৬ টাকা ৭০ পয়সায়, ফাস ফাইন্যান্স ৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে নেমেছে ১ টাকা ৫০ পয়সায়, প্রিমিয়ার লিজিং ৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে নেমেছে ১ টাকা ৮০ পয়সায়, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ৪ টাকা ৬০ পয়সা থেকে নেমেছে ১ টাকা ৮০ পয়সায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক ৮ টাকা ৭০ পয়সা থেকে নেমেছে ২ টাকা ৮০ পয়সায়, ন্যাশনাল টি ৫২৯ টাকা থেকে নেমেছে ১৯৩ টাকায়, বে লিজিং ১১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে নেমেছে ৪ টাকা ৭০ পয়সায়, প্রাইম ফাইন্যান্স ৬ টাকা ৮০ পয়সা থেকে নেমেছে ২ টাকা ৯০ পয়সায়, ফিনিক্স ফাইন্যান্স ৮ টাকা ৪০ পয়সা এবং এক্সিম ব্যাংক ৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে নেমেছে ৪ টাকা ৪০ পয়সায়।

ব্যাংক শেয়ারে হতে পারে ভরসার আলো

এই তালিকায় চারটি ব্যাংক—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক—বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মার্জার প্রক্রিয়ার আওতায় রয়েছে। বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, এই মার্জার প্রক্রিয়া এগিয়ে গেলে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন ভরসার পরিবেশ তৈরি হতে পারে।

বিশেষ করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার হওয়ায় বাজারে তুলনামূলকভাবে তাদের প্রতি আস্থা কিছুটা বেশি রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে এ ধরনের ব্যাংক শেয়ার ধস কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। যদি ব্যাংকগুলো শেয়ারবাজার থেকে তালিকাচ্যুত না হয়।

লিজিং ও ফাইন্যান্স খাতে অনিশ্চয়তা

অন্যদিকে, জিএসপি ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ফাস ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বে লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স ও ফিনিক্স ফাইন্যান্স একের পর এক লোকসানে ডুবে আছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এ প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে ইতিবাচক দিক হলো—কর্তৃপক্ষ চাইলে এগুলো পুনর্গঠনের মাধ্যমে আবারও কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

সামনে কী আছে?

শেয়ারবাজারে খাতভিত্তিক সংস্কার ও মার্জার প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়ন হলে দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলো বাদ যাবে এবং টেকসই কোম্পানিগুলো এগিয়ে আসবে। এতে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, “এখনই সময় বিনিয়োগকারীদের সতর্কভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ার এড়িয়ে মৌলভিত্তি শক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করাই হবে সঠিক কৌশল।”

এএসএম/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত