ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২

‘দিল্লির দয়া চাই না, বাংলার উন্নয়ন বাংলার মানুষই করবে’

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১১ ১২:৪৪:২৫

‘দিল্লির দয়া চাই না, বাংলার উন্নয়ন বাংলার মানুষই করবে’

আন্ত্ররজাতিক ডেস্কঃভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্যকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করছে, বাংলাভাষী শ্রমিকদের অন্য রাজ্যে হেনস্তা করছে এবং তাদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে অপমান করছে।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) জলপাইগুড়িতে এক জনসভায় তিনি বলেন, “বাংলা নিজের শক্তিতে এগিয়ে যাবে। বাংলার হাল ধরবে বাংলার মানুষই।”

মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে জানান, ভাষার কারণে কাউকে অপরাধী হতে দেবেন না। তিনি বলেন, “রাজবংশী ভাষায় কথা বলাও অপরাধ নয়। আমরা মাতৃভাষায় কথা বলব, পাশাপাশি অন্য ভাষা শিখব। কিন্তু বাংলায় কথা বললেই যদি বাংলাদেশি বলা হয়, আমরা তা কোনোভাবেই মেনে নেব না।”

মমতা আসাম, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে এনআরসি নোটিশ ইস্যুর প্রসঙ্গও টেনে আনেন। তার ভাষ্য, “আদিবাসী মেয়েরাও রেহাই পাচ্ছেন না। বাংলার মানুষকে দমিয়ে রাখা যাবে না।”

তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত ২৪ হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “বাংলায় দেড় কোটি বাইরের শ্রমিক কাজ করছে, আমরা তাদের কিছু বলি না, সব সরকারি সুবিধা দিই। তাহলে আমাদের শ্রমিকরা অন্য রাজ্যে গেলে কেন তাড়ানো বা মারধর করা হয়?”

সভায় কেন্দ্রীয় তহবিল বন্ধ করে দেওয়ার নীতির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। তিনি বলেন, “১০০ দিনের কাজ, সর্বশিক্ষা মিশন, রাস্তা সংস্কার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ—সব ক্ষেত্রেই অর্থপ্রদানে ব্যাঘাত ঘটানো হয়েছে।”

মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা দিল্লির দয়া চাই না, ভিক্ষাও চাই না। বাংলার উন্নয়ন বাংলার মানুষই করবে।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পরোক্ষভাবে আক্রমণ করে মমতা বলেন, “যিনি জাতপাতের বিভাজন করেন, তিনি কখনও দেশের নেতা হতে পারেন না।”

তিনি আরও বলেন, বাংলাকে গুজরাতে রূপান্তর করার চেষ্টা রুখে দেওয়া হবে। “যতদিন বাঁচব, জয় বাংলা বলব,” ঘোষণা দেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মমতা উত্তরবঙ্গের মানুষের সমস্যা বিশেষত পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যু সামনে এনে ভোটের সমীকরণে প্রভাব ফেলতে চাইছেন। কেন্দ্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক টানাপোড়েনকেও তিনি হাতিয়ার বানাচ্ছেন নিজেকে বাংলার রক্ষাকর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে।

অন্যদিকে বিরোধীরা এটিকে নির্বাচনী চাল বলছে। তাদের মতে, বাস্তবে শ্রমিকদের দুর্দশা তেমন কমেনি। তবে সমর্থকরা মনে করেন, অন্তত মুখ্যমন্ত্রী সমস্যাটি সরাসরি তুলে ধরছেন, যা সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে।

ইএইচপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত