ঢাকা, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২

চালের দামে দিশেহারা মধ্যবিত্তরাও

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৭ ০০:৩০:২৬

চালের দামে দিশেহারা মধ্যবিত্তরাও

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে বাংলাদেশের চালের বাজার অস্থির অবস্থায় রয়েছে, যা নিম্নবিত্তের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকেও চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে। যেখানে নিম্নবিত্তরা সরকারি সহায়তা হিসেবে ১৫ ও ৩০ টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছেন, সেখানে মধ্যবিত্তরা উচ্চ বাজারমূল্যের কারণে চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের আয়ের একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে দৈনন্দিন সংসারের খরচ মেটাতে, যার মধ্যে চালের উচ্চমূল্য একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাজধানীর আফজাল হোসেনের মতো অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারই এই সমস্যার সম্মুখীন। তিনি জানান, মোটামুটি মানের চাল এখন ৬৫ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না, যা তাদের মতো সীমিত আয়ের পরিবারের জন্য একটি বড় চাপ। চালের দাম বাড়ার সাথে সাথে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, মধ্যবিত্তরা সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় এবং লাইনে দাঁড়াতে না পারায় এক চাপা কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

বাজার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চালের এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির জন্য কেউ দায় নিতে চাইছে না। কৃষক, মিলার, ডিলার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সকলেই একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। বর্তমানে খুচরা বাজারে মিনিকেট চাল ৭২-৭৮ টাকা, নাজিরশাইল ৭৫-৭৮ টাকা এবং বিআর-২৮ ও বিআর-২৯ চাল ৬০-৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চালের দাম বাড়ার প্রধান কারণগুলো হলো অবৈধ মজুতদারি, মধ্যস্বত্বভোগীদের অতিরিক্ত মুনাফা, বাজার নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং বিশ্ববাজারের সঙ্গে অসামঞ্জস্যতা। অবৈধভাবে চাল মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ২১ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য মজুত থাকলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে। খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানিয়েছেন, খাদ্যশস্যের মজুত ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে, যা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। তবে মাঠ পর্যায়ের তথ্য বলছে, মজুতদারি চক্র অবৈধভাবে চাল মজুত করে বাজার অস্থিতিশীল করছে।

বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কে এম লায়েক আলী জানান, মিলাররা নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহ করলেও বাজার মনিটরিং-এর দুর্বলতার কারণে খুচরা বাজারে দাম বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। এতকিছুর পরও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের কঠোর নজরদারি এবং মজুতদারি রোধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত