ঢাকা, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২

তৃপ্তি মেলেনি, তাই সালমান আজও অমর

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১৪:৫০:১৭

তৃপ্তি মেলেনি, তাই সালমান আজও অমর

বিনোদন ডেস্কঃ আজ ৬ সেপ্টেম্বর ঢালিউড রাজপুত্র সালমান শাহ'র চলে যাওয়ার দিন। ১৯৯৬ সালের এই দিন জনপ্রিয়তার মধ্য গগনে থাকাবস্থায় রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় তার। ২৯ বছরেও সে জনপ্রিয়তায় জমেনি শ্যাওলা। কারণ কী? অনেকে মনে করেন হঠাৎ চলে গিয়ে দর্শকদের মনে দাগ কেটে আছেন সালমান। আসলেই কি তাই? বিষয়টি নিয়ে কথা হয় অকাল প্রয়াত এই নায়কের সহশিল্পীদের সঙ্গে।

সালমান শাহকে নিয়ে ছটকু আহমেদ নির্মাণ করেছেন ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘বুকের ভিতর আগুন’। তিনি বলেন, ‘সালমানের মতো অভিনয় কে করে। পর্দায় দর্শককে কে হাসায়, কাঁদায়। ওর মতো স্টাইল কার আছে। তারুণ্য, উদ্দীপনা, সু-ব্যবহার— সব মিলিয়ে বাংলা সিনেমার এরকম স্টাইলিশ আইকনকে কে ভুলবে।’

বর্ষীয়ান এই চলচ্চিত্র নির্মাতা মনে করেন সালমানের হঠাৎ চলে যাওয়া দাগ বসিয়েছে দর্শকের মনে। তার কথায়, ‘প্রিয় মানুষ হঠাৎ চলে গেলে মনে দাগ কাটে। সালমানের সাথে এমনভাবে দর্শকরা মিশে গিয়েছিলেন যে ওর চলে যাওয়া তাদের ভেতর এক ধরনের শূন্যতা তৈরি করেছে। যে কারণে আজও তার জনপ্রিয়তা সেরকমই আছে।’

‘আঞ্জুমান’, ‘আশা ভালোবাসা’, ‘মায়ের অধিকার’— সিনেমা তিনটিতে সালমানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনাজ। তিনি মনে করেন সালমানের এই জনপ্রিয়তা অস্বাভাবিক না। শাবনাজ বলেন, ‘জনপ্রিয়তা থাকাবস্থায় সালমানের মৃত্যু হয়েছে। ওই জায়গা থেকে এটা স্বাভাবিক। কারণ তার ক্রেজটা রয়ে গেছে। ওর নিজস্ব স্টাইল ছিল, অভিনয়েও আলাদা ছিল। যদিও একেকজনের অভিনয় একেক রকম। সোহেল রানা ভাই, রাজ্জাক স্যার, আলমগীর স্যার, রিয়াজ, ফেরদৌস, নাঈম— প্রত্যেকে নিজদের কাজের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়। কিন্তু সালমানের মৃত্যু নায়ক থাকাকালীন হয়েছে। অতএব তার জনপ্রিয়তা না থাকলেই অসঙ্গতি মনে হতো।’

ছটকু আহমেদের সুরে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘সালমানের হঠাৎ চলে যাওয়াও একটি কারণ। ওর কাজ দেখে মানুষের তৃপ্তি শেষ হয়নি। কোনোকিছু তৃপ্তি শেষের আগে ফুরিয়ে গেলে আকাঙ্ক্ষা থেকে যায়। সালমানের ক্ষেত্রে দর্শকের আকাঙ্ক্ষা এখনও রয়ে গেছে।’

সালমানের ক্যারিয়ারের ব্যবসাসফল একটি সিনেমা ‘তোমাকে চাই’। ছবিটির নির্মাতা মতিন রহমান। মৃত্যুর আড়াই যুগ পরও সালমানের জনপ্রিয়তা অবাক করে তাকে। তিনি বলেন, ‘এর উত্তর বের করা কঠিন। আজ যারা সালমানের ভক্ত। তার নামে অনলাইন, অফলাইনে ফ্যান ক্লাব করছেন তাদের কেউ সালমানের জীবদ্দশায় পৃথিবীতে আসেননি। নিউজ পড়ে, ছবি দেখে সালমানের ভক্ত হয়েছেন। এর কারণ কি? সে প্রশ্নের উত্তর আমার মনে হয় দর্শকরাই ভালো বলতে পারেন।’

তার কথায়, ‘আজও তার এই জনপ্রিয়তা দেখে আমি মাঝে মাঝে অবাক হই। এমন না যে অনেকগুলো ছবি করেছে। অল্প কিছু কাজ করেই দর্শকের মনে এভাবে দাগ কেটে আছে সে। তবে হ্যাঁ, তার মাঝে বৈচিত্রতা, ফ্যাশন সচেতনতা ছিল। অভিনয় ভালো করত। আজকাল ভারতীয় ছবির দিকে তাকালে সালমানের ফ্যাশনের সঙ্গে সেখানকার অভিনেতাদের মিল পাই। মনে হয় এগুলো তার জনপ্রিয়তার কারণ। এখন অনেক ভালো ভালো অভিনেতা এসেছে। শূন্যস্থান পূরণ হয়েছে। তারা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন। তারপরও এ কথা সে কথা সালমান-ই শেষ কথা।’

সবশেষে ‘তোমাকে চাই’-এর নির্মাতা বলেন, ‘সালমানের হঠাৎ চলে যাওয়া জনপ্রিয়তার একটি কারণ হতে পারে। কেননা আরও প্রত্যাশা ছিল, আরও কিছু পাওয়ার ছিল তার থেকে। তাকে দেখার সাধ মিটল না। অনেকটা জনপ্রিয় গল্পের বই, চিত্রকর্মের মতো। শেষ হলেও রেশ থেকে যায়। এসব কারণে এই নায়ক আজও জনপ্রিয় বলে আমি মনে করি।’

ইএইচপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত