ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
পশ্চিমা ক্যামেরায় খাবার, বাস্তবে গা-জা-য় শিশুদের মৃ-ত্যু মিছিল

পশ্চিমা গণমাধ্যমে গাজায় খাদ্য বিতরণের ছবি ও ফুটেজ দেখে অনেকেই ধারণা করছেন—চরম কষ্টের মাঝেও গাজার মানুষ কিছুটা হলেও খাবার পাচ্ছে। কিন্তু এসব দৃশ্যের পেছনে বাস্তবতা আরও ভয়ংকর। গাজায় চলছে পরিকল্পিতভাবে অনাহারে রেখে গণহত্যার নির্মম প্রক্রিয়া।
ইসরায়েলি বাহিনী কিছু নির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ত্রাণ বিতরণের ছবি তোলার অনুমতি দিচ্ছে। অন্যদিকে, সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করা হচ্ছে, যাতে বাস্তব চিত্র—অনাহারে কাতর মানুষ, ক্ষুধার্ত শিশুদের আর্তনাদ—বিশ্ববাসীর দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকে।
গতকাল বুধবার (২৭ আগস্ট) গাজায় অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে দুই শিশু। ২৭ মে’র পর থেকে অনাহারে প্রাণ গেছে ৩১৩ জনের, যার মধ্যে শিশু ১১৯ জন। এর বাইরে বোমা হামলা ও ত্রাণ বিতরণের নামে হত্যাকাণ্ডও অব্যাহত আছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, গতকাল এক দিনে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৭৫ জন, আহত ২৬৮ জন। নিহতদের মধ্যে ১৮ জন ছিলেন ত্রাণ প্রত্যাশী।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৬২ হাজার ৮৯৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ৫৮ হাজার ৯২৭ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (UNRWA) জানিয়েছে, গাজায় গত দুই সপ্তাহে ত্রাণ সরবরাহ ভয়াবহভাবে কমেছে, যা দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতিকে আরও ভয়ংকর করে তুলছে। সংস্থাটির মতে, ১০ লাখের বেশি শিশু ভয়াবহ অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে।গাজা সিটির অর্ধেকের বেশি মানুষ চরম খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংস্থাটি অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল মানবিক আইন ও নীতিমালা পুরোপুরি লঙ্ঘন করছে।
গাজার আল নাসের হাসপাতালে গত সোমবার ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ৫ জন সাংবাদিকসহ ২১ জন নিহত হন। একাধিকবার চালানো হামলায় নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক ও উদ্ধারকর্মীই বেশি।
এই ঘটনায় ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, “এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর অগ্রহণযোগ্য হামলা।” তিনি গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানান।
এর আগে বিশ্ব সাংবাদিক সংগঠন, যুক্তরাজ্য, এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজায় সাংবাদিক হত্যা ও বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, "সাংবাদিক, স্বাস্থ্যকর্মী ও বেসামরিক মানুষকে অবশ্যই সুরক্ষা দিতে হবে," এবং দ্রুত যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।
আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সংস্থা মেডেসিনস সঁ ফ্রঁতিয়ে (এমএসফ) জানিয়েছে, গাজায় তাদের পরিচালিত ছয়টি অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্রে ৯০ হাজার মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই শিশু।দ্য ল্যানসেট-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, এসব শিশুদের বেশিরভাগই বোমা হামলা, কামানের গোলা ও গুলির আঘাতে আহত হয়েছিল।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- তিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- আইসিবি’র বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি
- কেয়া কসমেটিক্সের ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও, চার ব্যাংককে তলব
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- ব্লুমবার্গের টেকসই তালিকায় বাংলাদেশের ১১ তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- দুই খবরে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের চমক
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- ২৩ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল ডিএসই
- বিএসইসির নতুন মার্জিন বিধিমালার খসড়া অনুমোদন
- কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত
- শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ