সীমানা চূড়ান্ত করতে ইসির শুনানি, আসন বাড়ছে-কমছে যেখানে

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আগামী ২৪ আগস্ট থেকে শুনানি শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সোমবার (১৮ আগস্ট) ইসি কর্মকর্তারা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। চার দিনব্যাপী এই শুনানিতে বিভিন্ন আসনের সীমানা নিয়ে জমা পড়া ১ হাজার ৭৬০টি দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত ৮৩টি সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে এসব দাবি ও আপত্তি জমা পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৮৩টি আবেদন পড়েছে কুমিল্লা অঞ্চল থেকে।

অঞ্চলভিত্তিক শুনানির সময়সূচি অনুযায়ী, ২৪ আগস্ট কুমিল্লা অঞ্চলের ৬৮৩টি দাবি-আপত্তির শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ আগস্ট খুলনা অঞ্চলের ৯৮টি, বরিশাল অঞ্চলের ৩৮১টি এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২০টি আবেদনের শুনানি হবে। ২৬ আগস্ট ঢাকা অঞ্চলের ৩১৬টি এবং সবশেষে ২৭ আগস্ট রংপুর অঞ্চলের ৭টি, রাজশাহী অঞ্চলের ২৩২টি, ময়মনসিংহের ৩টি, ফরিদপুরের ১৮টি এবং সিলেটের ২টি দাবি-আপত্তির শুনানি গ্রহণ করবে কমিশন।

এর আগে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন ৩০০টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া তালিকা প্রকাশ করে। এই খসড়ায় প্রধান পরিবর্তন আনা হয়েছে গাজীপুর ও বাগেরহাট জেলায়। ভোটার সংখ্যার সমতা আনার লক্ষ্যে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি এবং বাগেরহাট জেলায় একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, ৬৪ জেলার গড় ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২০ হাজার ৫০০ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই গড় অনুযায়ী, গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো হলে ভোটার সংখ্যায় সমতা আসে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই দুটি জেলা ছাড়া বড় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি, তবে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো সমন্বয় করা হয়েছে।

যে ৩৯টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়েছে সেগুলো হলো: পঞ্চগড়-১ ও ২, রংপুর-৩, সিরাজগঞ্জ-১ ও ২, সাতক্ষীরা-৩ ও ৪, শরীয়তপুর-২ ও ৩, ঢাকা-২, ৩, ৭, ১০, ১৪ ও ১৯, গাজীপুর-১, ২, ৩, ৫ ও ৬, নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪ ও ৫, সিলেট-১ ও ৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩, কুমিল্লা-১, ২, ১০ ও ১১, নোয়াখালী-১, ২, ৪ ও ৫, চট্টগ্রাম-৭ ও ৮ এবং বাগেরহাট-২ ও ৩।

খসড়া অনুযায়ী, বাগেরহাটের ক্ষেত্রে বাগেরহাট-১ (মোল্লারহাট-ফকিরহাট-চিতলমারী) আসনের সীমানা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। নতুন প্রস্তাবে বাগেরহাট সদর, কচুয়া ও রামপাল উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ আসন গঠনের কথা বলা হয়েছে। পূর্বে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ছিল।

এই শুনানির মাধ্যমে সকল দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি করে নির্বাচন কমিশন সংসদীয় আসনের চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণ করবে এবং গেজেট আকারে প্রকাশ করবে।