ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

হাসিনার নির্দেশে জিয়াউলের ‘কি'লিং স্কোয়াড’ এর হাতে খু'ন হন ইলিয়াস আলী

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ আগস্ট ১৭ ১৪:৫৩:৪৮
হাসিনার নির্দেশে জিয়াউলের ‘কি'লিং স্কোয়াড’ এর হাতে খু'ন হন ইলিয়াস আলী

চাঞ্চল্যকর গুমের শিকার বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এম ইলিয়াস আলীর পরিণতি বরখাস্তকৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের হাতেই হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাজধানী থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিণতি নিয়ে যে রহস্যের জাল তৈরি হয়েছিল, সম্প্রতি এক র‍্যাব সদস্যের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তা উন্মোচিত হতে শুরু করেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বাধীন একটি 'কিলিং স্কোয়াড' ইলিয়াস আলীকে অপহরণের পর হত্যা করে এবং তার লাশ যমুনা নদীতে ফেলে দেয়।

বিএনপির তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী এবং তার গাড়িচালক আনসার আলীকে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকার বনানী এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। এর পর থেকে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি, যা নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলন হয় এবং বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোচিত হয়। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এই বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে।

সদ্য বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার হওয়া মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান বর্তমানে একাধিক মামলায় কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র‍্যাব) কর্মরত থাকাকালীন অসংখ্য গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনের জন্য একটি গোপন নির্যাতন কেন্দ্র, যা 'আয়নাঘর' নামে পরিচিত, তার তত্ত্বাবধান করতেন। গুমের শিকার অনেককে এই আয়নাঘরেই আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো বলে জানা যায়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া এক র‍্যাব সদস্যের জবানবন্দি অনুযায়ী, ইলিয়াস আলীকে অপহরণের পর জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বাধীন দলটিই তাকে হত্যা করে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জিয়াউলের কিলিং স্কোয়াড বিভিন্ন পৈশাচিক উপায়ে হত্যাকাণ্ড ঘটাতো। এর মধ্যে রয়েছে ইনজেকশন দিয়ে হত্যার পর লাশ রেললাইনে ফেলে রাখা, কিংবা সিমেন্টের বস্তা বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া। কমলাপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত রেললাইনে পাওয়া অনেক অজ্ঞাত লাশ এবং বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা থেকে উদ্ধার হওয়া বহু মরদেহের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে।

জিয়াউল আহসান বর্তমানে নিউমার্কেট এলাকায় হকার শাহজাহান হত্যা মামলায় রিমান্ডে আছেন। এছাড়াও তার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন, ৬ আগস্ট, তাকে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত