ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২
নির্বাচন বানচাল করতে সাবেক আমলাদের গোপন ষড়যন্ত্র

গত বছর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের এক বছর পরও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়নি। আসন্ন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার জন্য এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দেশে ফেরার পথ সুগম করতে সাবেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গোপনে বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ ও ষড়যন্ত্র করছেন বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সুবিধাভোগী কিছু সাবেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী বর্তমানে কর্মরতদের সাথে অফলাইন ও অনলাইনে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। সরকারের বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত কিছু ব্যক্তি গোপনে তাদের কাছে তথ্য পাচার করছেন। এসব কর্মকাণ্ডে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার যোগসাজশও রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
নাশকতার ছক ও নতুন তথ্য
গত এক বছরে ড. ইউনূস সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কয়েকটি নাশকতার ছক বানচাল করে দিয়েছে। সর্বশেষ ঘটনায়, ঢাকায় একটি গোপন বৈঠকে নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে মেজর সাদিকুল হক সাদিককে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তার স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে, সাবেক ও বর্তমানে কর্মরত কিছু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ক্ষমতাচ্যুত রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অনলাইনে ভিডিও কলের মাধ্যমে নিয়মিত গোপন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। এসব যোগাযোগে সিগন্যাল, টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং গুগল ব্যবহার করা হচ্ছে। ভারতে গোপন অফিস ভাড়া নিয়ে দেশের ভেতরে থাকা সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এসব ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করা, শ্রমিক অসন্তোষ উসকে দেওয়া এবং সাইবার জগতে মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
নাশকতা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য
গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটিয়ে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করা। তারা মনে করে, এতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার পথ সহজ হবে। একইসাথে, তারা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা ঠেকানোর চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য হলো, বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কমানো।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের রাজনৈতিক নেতারা বিদেশে বসেই বিভিন্ন নাশকতার নির্দেশনা দিচ্ছেন এবং হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ ও অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ করছেন। গত আগস্টে লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদও এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন, ডাকাতি, হামলা ও নাশকতার পেছনে এসব চক্রের যোগসূত্র পাওয়া গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা
পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা দেশবিরোধী চক্রান্ত ও নাশকতা রুখতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন। পুলিশের বিভিন্ন টিম নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে।
সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া মেজর সাদিকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিনের দাবি, তিনি কেবল স্বামীর সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন এবং সেখানে কী হচ্ছিল তা তিনি জানতেন না। অন্যদিকে, যেই শামীমা নাসরিন শম্পার নামে কনভেনশন হলটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল, তাকে গত ৮ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সুমাইয়া একটি ফেসবুক গ্রুপ 'ওডিবি-এম-১৭০১'-এর অন্যতম অ্যাডমিন ছিলেন, যা বিভিন্ন নাশকতার পরিকল্পনা সমন্বয়ের জন্য ব্যবহৃত হতো।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বস্ত্র খাতের ১৩ কোম্পানি
- মার্জিন ঋণে মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে বিনিয়োগ করা যাবে না
- শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৭ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব: ফের অস্থির শেয়ারবাজার
- ১২ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৯ খবর
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
- রবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের মুখে গ্রামীণফোন
- সামিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কিনছে আরব আমিরাতের কোম্পানি
- টানা পতনেও শেয়ারবাজারে পুনরুজ্জীবনের সংকেত
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- চলতি সপ্তাহে ৬ কোম্পানির ডিভিডেন্ড অনুমোদন