ঢাকা, বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২

ট্রাইব্যুনালে চাঞ্চল্যকর সাক্ষ্য: 'হিন্দিভাষী পুলিশ' দেখেছিল সাক্ষী

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ আগস্ট ১৩ ১৮:৪২:১৫
ট্রাইব্যুনালে চাঞ্চল্যকর সাক্ষ্য: 'হিন্দিভাষী পুলিশ' দেখেছিল সাক্ষী

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় পুলিশের পোশাক পরা সদস্যদের হিন্দিতে কথা বলতে শোনার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন একজন সাক্ষী।

ওই ঘটনায় নিহত মো. ইয়াকুবের চাচা শহীদ আহম্মেদ বুধবার (১৩ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ সাক্ষ্য দেন।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পাঁচ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তিনি। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল তার জবানবন্দি রেকর্ড করে।

জবানবন্দিতে যা বললেন সাক্ষী:

৪০ বছর বয়সী শহীদ আহম্মেদ ট্রাইব্যুনালকে বলেন, "২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে আমি, আমার ভাতিজা ইয়াকুব, ছেলে সালমান এবং এলাকার আরও অনেকে গণভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। সাড়ে ১১টায় চানখারপুল পৌঁছালে দেখি হাজার হাজার মানুষ জড়ো হচ্ছে। মোড়ের উল্টো দিকে অনেক পুলিশ ও ছাপা পোশাকধারী সদস্য ছিল।"

তিনি তার সাক্ষ্যে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্যটি দিয়ে বলেন, "ওই সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত লোকদের হিন্দি ভাষায় কথা বলতে শুনি। তারা আমাদের বাধা দিচ্ছিল এবং আমাদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোড়ে।"

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও বলেন, "ফাঁকা গুলি ছুড়তেই আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। কিছুক্ষণ পর আবার সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমাদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি চালায় পুলিশ। এতে আমার পাশের একজনের পায়ে গুলি লাগে। আমি তাকে নিরাপদ স্থানে সরাচ্ছিলাম, ঠিক তখনই একজন চিৎকার করে বলে, 'আপনার ভাতিজা ইয়াকুবের গায়ে গুলি লেগেছে'।"

শহীদ আহম্মেদ বলেন, "আমি দ্রুত ভাতিজার কাছে যাই এবং আরও দুজনের সহায়তায় তাকে একটি অটোরিকশায় করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, ইয়াকুব মারা গেছে।"

সাক্ষ্য দেওয়ার এক পর্যায়ে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এবং যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তীকে নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করেন। তিনি আরও দাবি করেন, ডিএমপির মো. ইমরুল ও ইন্সপেক্টর আরশাদের উপস্থিতিতে কনস্টেবল সুজন, নাসিরুল ও ইমাজ গুলি চালিয়েছিলেন।

জবানবন্দি শেষে তিনি বলেন, "আমি আসামিদের বিচার চাই।"

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত