ঢাকা, শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

‘ওডিবি-এম ১৭০১’ গ্রুপে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, অ্যাডমিন মেজরপত্নী সুমাইয়া

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ আগস্ট ০৮ ১৪:৫৭:২৫
‘ওডিবি-এম ১৭০১’ গ্রুপে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, অ্যাডমিন মেজরপত্নী সুমাইয়া

ফেসবুকভিত্তিক ‘ওডিবি-এম-১৭০১’ (অপারেশন ঢাকা ব্লকেড) নামক একটি গোপন গ্রুপে যুক্ত থেকে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মেজর সাদিকুল হকের স্ত্রী সুমাইয়া তাহমিদ জাফরিনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ওই গ্রুপের অ্যাডমিনদের একজন তিনি।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, গ্রুপটির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত নেতাদের গোপন তথ্য সংগ্রহ, ডেটা এন্ট্রি, কোড তৈরি এবং বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করতেন সুমাইয়া। গুগল শিট, হোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যাল অ্যাপের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সংযুক্ত করাসহ গোপন বৈঠকের সমন্বয়েও ভূমিকা রাখতেন তিনি।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে, রাজধানীর একাধিক রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট ও ফ্ল্যাটে সরকারবিরোধী বৈঠকে অংশ নেন সুমাইয়া ও তার স্বামী। এসব বৈঠকে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার পাশাপাশি সমাজে বিশৃঙ্খলা ও আতঙ্ক ছড়ানোর নীলনকশা তৈরি হয়। এমনকি পথশিশুদের জড়িত করে অপকর্ম চালানোর পরিকল্পনাও ছিল বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

সুমাইয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহার অনুযায়ী, ৮ জুলাই রাজধানীর একটি কনভেনশন হলে ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ অংশের উদ্যোগে একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা ওই বৈঠকে অংশ নেন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাসহ ৩০০ থেকে ৪০০ জন। বৈঠকে শেখ হাসিনার দেশে ‘পুনরাবির্ভাব’ ঘটানোর জন্য ‘শাহবাগ মোড় দখলের’ পরিকল্পনা করা হয়।

এ ঘটনায় ১৩ জুলাই ভাটারা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন এসআই জ্যোতির্ময় মণ্ডল। মামলায় সুমাইয়ার নাম না থাকলেও তদন্তের ভিত্তিতে ৬ আগস্ট মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি।

গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, সুমাইয়ার বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এবং সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে তিনি জড়িত।

তবে সুমাইয়ার আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহীন আদালতে বলেন, মামলার এজাহারে তার নাম নেই কোনো সাক্ষী ১৬১ বা ১৬৪ ধারায় তার নাম উল্লেখ করেননি। ১১ জুলাই মামলা হলেও তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৬ আগস্ট যা সম্পূর্ণ সন্দেহের ভিত্তিতে।

আদালতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুমাইয়া বলেন, “আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কনভেনশন হলে গিয়েছিলাম সেখানে কী হচ্ছিল জানতাম না। আমাকে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে কিন্তু দয়া করে রিমান্ডে দেবেন না স্যার।”

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, সুমাইয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, “সুমাইয়ার বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

তথ্য: যুগান্তর

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত