ঢাকা, শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

সাংবাদিক তুহিন হত্যার নেপথ্যের কারণ জানা গেল

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ আগস্ট ০৮ ১২:০৩:৪১
সাংবাদিক তুহিন হত্যার নেপথ্যের কারণ জানা গেল

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যার পেছনে কী কারণ ছিল সে বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ-উত্তর) মো. রবিউল ইসলাম জানান, চাঁদাবাজির জেরে নয় বরং বাদশা নামের এক ব্যক্তির ওপর হামলার ভিডিও ধারণ করাই তুহিনের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তুহিন হত্যাসহ গাজীপুরে আরেক সাংবাদিককে পাথর দিয়ে পা থেঁতলে আহত করার ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে। আহত সাংবাদিকের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করলেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনার পর স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নিহত ও আহত সাংবাদিকের সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত পৌনে ৮টার দিকে মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেটের সামনে প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

ঘটনার পর প্রাপ্ত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কয়েকজন যুবক বাদশা নামের এক ব্যক্তিকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে এবং ধাওয়া দেয়। এক পর্যায়ে আসাদুজ্জামান তুহিনকে শত শত মানুষের সামনে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় আহত বাদশা বলেন, চৌরাস্তা পার হওয়ার সময় এক নারী তাকে টার্গেট করে টাকা-পয়সা নিয়ে নিতে চাইলে তিনি নারীকে আঘাত করেন। এরপর সন্ত্রাসীরা তাকে ধাওয়া করে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।

বিষয়টি নিয়ে বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন খান বলেন, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি এ মামলা দায়ের করেন।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এক নারী ও তার চক্রের সদস্যরা একজন লোককে টার্গেট করেন। এ সময় ওই লোক নারীর ফাঁদে না পড়ে ওই নারীকে একটি থাপ্পড় দেন। এ সময় তার পাশে থাকা চক্রের ওত পেতে থাকা অন্য দুষ্কৃতকারীরা তাকে ধাওয়া দেয়। পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করে। এ সময় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন সেই ভিডিও চিত্রধারণ করতে গেলে ওই চক্রের সদস্যরা তাকে ধাওয়া করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।

এদিকে সদর থানা এলাকায় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে পাথর দিয়ে পা থেঁতলে গুরুতর আহত করার ঘটনায় সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।‌

এ বিষয়ে সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে আহতের ঘটনায় তার মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত বুধবার (৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দেখা যায় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে টেনেহিঁচড়ে মারধর করা হচ্ছে। স্বজন ও সহকর্মীদের অভিযোগ, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করায় তাকে পাথর দিয়ে আঘাত ও কিলঘুষি মেরে গুরুতরভাবে আহত করা হয়।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত